বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, পরিশ্রমের ফল পেয়ে খুশি হাসান

দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষা। ইনজুরির তীব্রতা এতটাই ছিল, ক্যারিয়ারের উপরই প্রশ্নচিহ্ন উঠেছিল। কিন্তু সব আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে হাসান আলি দেখালেন, হার না মানা মনোবল আর নিবিড় পরিশ্রমের ফল কতটা মিষ্টি হতে পারে। জাতীয় দলে ফিরেই করলেন ধ্বংসাত্মক বোলিং, তুলে নিলেন পাঁচ উইকেট। তার এমন নৈপুণ্যেই প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৩৭ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।

দল যখন চেয়েছে, হাসান তখন ঠিকই জ্বলে উঠেছেন। ২০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দেওয়ার কাজটা হাসানই শুরু করেন। একে একে তুলে নেন পাঁচটি মূল্যবান উইকেট—যা কিনা ফিরে আসার ম্যাচেই ক্যারিয়ার নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, বিশ্বাস মুশতাকের

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ছিল না কোনো দাম্ভিকতা, বরং ছিল গভীর কৃতজ্ঞতা ও প্রশান্তির ছাপ। হাসান বলেন, “গত সাত-আট মাস আমার জন্য ছিল সত্যিই কঠিন। এমন এক ইনজুরি ছিল যা ক্যারিয়ারের দিক বদলে দিতে পারত। আলহামদুলিল্লাহ্‌—আজকের দিনটা আমার কাছে অনেক বড়। দলে ফিরে পাকিস্তানের হয়ে পারফর্ম করতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ।”

সফল প্রত্যাবর্তনের পেছনে ছিল দীর্ঘ অনুশীলন, নিরলস লড়াই এবং পরিবারের অবিচল সমর্থন। হাসান বলেন, “সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বিশ্বাস। আমি নিজেকে বিশ্বাস করেছি। আমি জানতাম, পারফর্ম করলে সুযোগ আসবেই। দুনিয়াতে অনেক বড় খেলোয়াড়রাই পারফরম্যান্সের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। আমাকেও সেভাবেই এগোতে হয়েছে। এখনো অনেক পথ বাকি।”

চোট কাটিয়ে এমন পারফরম্যান্স দিতে পারা যেন নিজের প্রতি আরেকবার প্রমাণ রাখার মতোই। এনসিএ, ফিজিও ও মেডিকেল স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “সবাই মিলে যেভাবে আমাকে ফিরে আসতে সাহায্য করেছে, সেটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। আমার স্ত্রী ও দুই সন্তানও এই কঠিন সময়টা আমাকে সাহস দিয়ে পার করে দিয়েছে। এই পারফরম্যান্স আমি তাদের উৎসর্গ করছি।”

দলে ফিরে আসার অনুভূতি জানাতে গিয়ে আবেগ ছুঁয়ে গেল তার কণ্ঠে—“দীর্ঘদিন পর অনেকের সঙ্গে আবার খেলছি। পুরনো মুখগুলো, পুরনো পরিবেশ, সবকিছু নতুনভাবে অনুভব হচ্ছে। এটা বিশেষ এক অনুভূতি, ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।”

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে গিয়েও ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি বাংলাদেশ

সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো সামনে রেখে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান হাসান। বলেন, “এখন যেহেতু আমি ইনজুরি থেকে ফিরেছি, তাই শারীরিক চাপটা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। রোটেশন পলিসি অনুসারে দলের সবাই সুযোগ পাবে। সেইসঙ্গে বেঞ্চকেও শক্তিশালী করে তুলতে হবে।”

তবে এখনই বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে রাজি নন হাসান আলি। বরং চান সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই নিজের ভূমিকা ঠিকভাবে পালন করতে। যদিও তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—“২০২৬ বিশ্বকাপে খেলাটা আমার স্বপ্ন। কিন্তু তার আগে এখনকার দায়িত্বগুলো ঠিকভাবে পালন করাই আমার মূল লক্ষ্য। পারফর্ম করতে পারলে, যদি দল চায়—তাহলে অবশ্যই বিশ্বকাপে খেলতে চাই।”

পাকিস্তান এখন সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে নামার আগে হাসান আলির এই প্রত্যাবর্তন দলকে যেমন বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে, তেমনি প্রতিপক্ষের জন্যও হবে এক স্পষ্ট বার্তা—পুরোনো সেই হাসান ফিরেছে, এবার সে হার মানতে আসেনি।

আরও পড়ুন: আবারও টসে হার, ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর