বুধবার, জুন ২৫, ২০২৫
সামি'স কর্নার

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ খেলবে, আশা করাও বোকামি: শান্ত

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল চলছে ঐতিহাসিক লর্ডসে। সাদা পোশাকের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাশক্তিগুলোর নাম থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশ? এখনও বহু দূরের গল্প। শীর্ষ দুইয়ে তো নয়ই, প্রথম ছয়েও পৌঁছাতে পারেনি কখনো। তবে টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত চান, অন্তত এবার সেই চক্র ভাঙুক।

তবে এক লাফে মুকুটের স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা মেপেই এগোতে চান শান্ত। বৃহস্পতিবার মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট করেই বললেন, “টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলাটা এই মুহূর্তে ভাবাও একরকম বোকামি। এটা অনেক বড় একটা স্বপ্ন। আমাদের প্রথম লক্ষ্য, ধাপে ধাপে উন্নতি করা। ছোট ছোট অর্জনের মধ্য দিয়েই তো বড় জায়গায় পৌঁছাতে হয়।”

আরও পড়ুন: ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতেই টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়েন শান্ত

২০২১-২৩ চক্রে মাত্র একটি জয় নিয়ে শেষ করেছিল বাংলাদেশ। পরের চক্রে কিছুটা উন্নতি, ৪টি জয়ের সুবাদে তালিকায় সপ্তম। এবার তাই লক্ষ্য আরও একটু ওপরে—অন্তত ছয় নম্বরে থেকে চক্র শেষ করা।

শান্ত বলছিলেন, “গতবার আমরা ৭-এ শেষ করেছিলাম, এবার চাই ৪, ৫ বা অন্তত ৬-এ শেষ করতে। উইনিং পারসেন্টেজ যদি ৫০ কিংবা তার বেশি করতে পারি, সেটা অধিনায়ক হিসেবে আমার জন্য বড় অর্জন হবে। ১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলবো সামনে, প্রতিটিতেই চ্যালেঞ্জ থাকবে। কিন্তু সবাই মিলে চেষ্টা করলে ভালো কিছু করে দেখানো সম্ভব।”

চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, গলে ১৭ জুন থেকে শুরু হচ্ছে দুই ম্যাচের সিরিজ। দ্বিতীয় টেস্ট ২৫ জুন। এরপর বছরজুড়ে কঠিন সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই। সেই যাত্রা শুরুর আগে শান্ত বারবারই বাস্তবতার কথাটাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন—আকাশছোঁয়া স্বপ্ন নয়, চোখ রাখা উচিত পা রাখার জায়গায়।

নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছেন শান্ত। টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব ছেড়ে এখন টেস্টে পূর্ণ মনোযোগ। নিজের জায়গা থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেক অধিনায়ককে একটু সময় দেওয়া দরকার। আগে যখন লম্বা সময় পেয়েছিলাম, তখন পরিকল্পনা করতে সুবিধা হয়েছিল। এবারও বোর্ড থেকে এক বছরের সময় পেয়েছি টেস্টের জন্য। এই সময়টাই কাজে লাগাতে চাই।”

আরও পড়ুন: পেসারদের দাপটে ফাইনালের প্রথম দিনেই ১৪ উইকেটের পতন

শান্ত জানেন, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেতে শুধু প্রতিভা নয়, দরকার ধারাবাহিকতা, ধৈর্য আর স্থির পরিকল্পনা। বলছিলেন, “এই আসরটাকে আমি একটা বিশ্বকাপের মতো ভাবি। এখানে ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্স করতে পারলে দলের আত্মবিশ্বাস যেমন বাড়ে, তেমনি বিশ্ব ক্রিকেটেও সম্মান তৈরি হয়।”

বাংলাদেশের ক্রিকেটে আশাবাদের ঘাটতি নেই কখনোই। কিন্তু সমস্যাটা পরিকল্পনা আর বাস্তবতা মেলাতে না পারায়। শান্তর কণ্ঠে তাই যেমন আছে স্বপ্নের স্পর্শ, তেমনই আছে কঠিন বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করার সাহস। সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে সময়ের সঙ্গে, মাঠের ভেতরেই।

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর