আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে নিয়মের পরিবর্তন আনছে আইসিসি। টেস্ট ও ওয়ানডের পর এবার বদল আসছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও। বিশেষ করে পাওয়ারপ্লের নিয়মে বড়সড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যা আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
এখন পর্যন্ত প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, টি-টোয়েন্টিতে ইনিংসের প্রথম ছয় ওভার থাকে পাওয়ারপ্লে। অর্থাৎ, ২০ ওভারের ম্যাচে মোট ওভারসংখ্যার ৩০ শতাংশের মতো থাকে পাওয়ারপ্লে। কিন্তু কোনো কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে এলে, যেমন বৃষ্টির কারণে ওভারসংখ্যা কমানো হয়, তখন পাওয়ারপ্লে ওভার সংখ্যা নির্ধারণ করা হতো পূর্ণ ওভারের ভিত্তিতে। উদাহরণস্বরূপ, ৮ ওভারের ম্যাচে পাওয়ারপ্লে নির্ধারিত হতো দুই ওভার — যা প্রায় ২৫ শতাংশের কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: ভিনিসিয়াসের ঝলকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ

নতুন নিয়মে আর এই পূর্ণ ওভারের হিসাব থাকবে না। বরং পাওয়ারপ্লের দৈর্ঘ্য নির্ধারিত হবে বলের ভিত্তিতে। অর্থাৎ, ইনিংসে মোট বলসংখ্যার ৩০ শতাংশ বল থাকবে পাওয়ারপ্লেতে। যেমন, কোনো ইনিংস যদি ৮ ওভারে নেমে আসে (যার মোট বল ৪৮), তাহলে ৩০ শতাংশ বল পাওয়ারপ্লে হবে ১৪.৪ বল। সেক্ষেত্রে পাওয়ারপ্লে হবে ২.২ ওভার — অর্থাৎ তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বল পর্যন্ত পাওয়ারপ্লে চলবে।
একইভাবে ৯ ওভারের ইনিংসে (মোট বল ৫৪) পাওয়ারপ্লে হবে ১৬ বলের মতো, যা প্রায় ২.৪ ওভার। নতুন নিয়মে আম্পায়াররা ওভারের মাঝে প্রয়োজনীয় বার্তা দিয়ে ফিল্ডিং সেটিং পরিবর্তনের অনুমতি দেবেন। যেমন ৮ ওভারের ম্যাচে তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলের পরই মাঠের বাইরে বাড়তি ফিল্ডার পাঠাতে পারবে বোলিং দল।

যদিও আইসিসি জানিয়েছে, এই নিয়মটি আসলে নতুন কিছু নয়। অনেক বছর ধরেই ইংল্যান্ডের টি২০ ব্লাস্ট টুর্নামেন্টে এই ধরনের বল-ভিত্তিক পাওয়ারপ্লে সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এর বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কার তেমন কারণ নেই। খেলোয়াড় ও ম্যাচ অফিসিয়ালরাও এর সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছে তারা।
আরও পড়ুন: ৯৯ এর তিক্ত অভিজ্ঞতা শুধু বাংলাদেশেরই নেই
এই পরিবর্তনের পাশাপাশি টেস্ট ও ওয়ানডের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। টেস্টে স্টপ ক্লক নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে, যা বোলারদের সময়মতো বল করার ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি আনবে। লালা দিয়ে বল পালিশের ক্ষেত্রে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। ডিআরএসে দ্বিতীয় রিভিউ অনুমোদন ও ঘরোয়া ক্রিকেটে পুরো সময়ের বদলি খেলোয়াড় ব্যবহারের নিয়মও প্রবর্তিত হয়েছে।

সাদা বলের ক্রিকেটে এসব নতুন নিয়ম আগামী ২ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। অন্যদিকে, নতুন নিয়মে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলোতে পাওয়ারপ্লে নিয়ে বিভ্রান্তি দূর হবে এবং ফিল্ডিং সাইড ও ব্যাটিং সাইড উভয়েরই কৌশল প্রয়োগে আরও স্বচ্ছতা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকদের চোখ থাকবে মাঠের খেলায় এই নতুন নিয়ম কতটা প্রভাব ফেলে সেটি দেখার দিকে। ধুম-ধারাক্কার ফরম্যাট টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটে ছোট এই পরিবর্তন, বড় কোনো পার্থক্য গড়ে দেবে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।