বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

ঘরের মাঠে আবারও হার আরসিবির

ঘরের মাঠে এখনও চলমান আসরে একটি ম্যাচও জিতেনি রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু(আরসিবি)। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে সাত ম্যাচ খেলা আরসিবি ৪টি জিতেছে ও ৩টি হেরেছে। মজার ব্যাপার, যে ৪টি ম্যাচ জিতেছে, সেই চার ম্যাচেই খেলেছে প্রতিপক্ষের মাটিতে, অন্যদিকে যে ৩ ম্যাচে হেরেছে, সেই তিনটিই খেলেছে নিজেদের ঘরের মাটিতে।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) ৩৪তম ম্যাচে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং পাঞ্জাব কিংস। ঘরের মাঠে এবার প্রথমবারের মত দুই পয়েন্ট পাবে, এই লক্ষ্যে যখন কোহলিরা বদ্ধপরিকর, তখনই বাধা দের বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের অনেক পর শুরু হওয়া ম্যাচটি গড়ায় ১৪ ওভারে। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার।

পাঞ্জাব অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে দেন তার বোলাররা। শুরু থেকেই একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে চাপে ফেলে দেন ব্যাঙ্গালোরের ব্যাটারদের। স্লো আউটফিল্ডের কারণে রান করাও হয়ে উঠছিল কঠিন। প্রথম ওভারেই ফিল সল্টকে ফিরিয়ে দেন আর্শদীপ সিং। পরের ওভারেই তার শিকার হন বিরাট কোহলি। আরসিবি নিজেদের ঘরের মাঠে তখনই ব্যাকফুটে চলে যায়।

আরও পড়ুন: নাহিদের বোলিংয়ে মুগ্ধ উইলিয়ামস

একপ্রান্তে অধিনায়ক রজত পাতিদার লড়াইয়ের চেষ্টা করলেও অন্যপ্রান্তে ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল। ব্যর্থতার তালিকায় নাম লেখান লিয়াম লিভিংস্টোন, জিতেশ শর্মা ও কুনাল পান্ডিয়া। এরপর অধিনায়ক পাতিদারও সাজঘরে ফিরলে স্কোরবোর্ডে ভেসে উঠে ৬ উইকেটে ৪১। পরের বলেই পড়ে যায় আরও একটি উইকেট, আরসিবির রান তখন ৭ উইকেটে ৪২। আর্শদ্বীপ সিং, মার্কো ইয়ানসেন, ইয়ুজভেন্দ্র চাহালরা রীতিমতো রাজত্ব করেন বেঙ্গালুরুর পিচে। একসময় মনে হচ্ছিল, আইপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোরের আরেকটি দৃষ্টান্ত গড়তে যাচ্ছে কি না বেঙ্গালুরু!

এই বিপর্যয়ের মধ্যেই ত্রাতা হয়ে হাজির হন টিম ডেভিড। ঘরের মাঠে দলকে চরম লজ্জার হাত থেকে বাঁচান এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার। সাত নম্বরে নামা এই ব্যাটার শুরু থেকেই খেলেছেন দায়িত্বশীল এক ইনিংস। অষ্টম উইকেটে ভুবনেশ্বর কুমারকে সঙ্গে নিয়ে ২০ বলে ২১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে দলের সর্বনিম্ন সংগ্রহের খড়গ এড়ান। তবে ভুবনেশ্বরের বিদায়ের পর পরের বলেই আরেকটি উইকেট পড়ে গেলে স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ৬৩।

শেষ উইকেটে একাই প্রতিরোধ গড়েন ডেভিড। শেষ উইকেটে ১৪ বলে ৩২ রানের জুটিতে ১১ নম্বর ব্যাটার জশ হ্যাজেলউডের অবদান ১ বলে ০! মাত্র ২৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস খেলেন টিম ডেভিড, যেখানে ছিল তিনটি বিশাল ছক্কা ও চারটি চার। তার লড়াকু ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ১৪ ওভারে আরসিবি তুলতে সক্ষম হয় ৯৫ রান।

আরও পড়ুন: সৈয়দ সামির সাথে একমত সাব্বির

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৯৬ রানের লক্ষ্যে পাঞ্জাবকে উড়ন্ত শুরু এনে দেওয়ার চেষ্টা করে পাঞ্জাবের দুই ওপেনার প্রিয়াংস আরিয়া এবং প্রাভসিমরান সি। দুইজন ইনিংস বড় করতে না পারলেও ৯৬ টার্গেটের জন্য কার্যকরী ছোট নক খেলে যান। এরপর জুটি বাঁধেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার জস ইংলিস। তবে অষ্টম ওভারে জশ হ্যাজলউডের জোড়া আঘাতে এই দুই সেট ব্যাটার আউট হলে প্রাণ ফিরে পায় আরসিবির ভক্তরা। ঘরের মাঠে প্রথম জয় দেখবে এমন আশায় বুক বাঁধতে থাকা দর্শকদের হতাশ করে পাঞ্জাবের পাঁচ নম্বর ব্যাটার নেহাল ওয়াধেরা। ১৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন নেহাল।

এই জয়ে ৭ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ২ নম্বরে উঠে এল পাঞ্জাব কিংস। অন্যদিকে, ঘরের মাঠে আরেকবার দর্শকদের হতাশ করে ৭ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে আছে আরসিবি।

স্কোরকার্ড:

রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ৯৫/৯ (১৪ ওভার)

(ডেভিড ৫০*, ইয়ানসেন ২/১০, চাহাল ২/১১)

পাঞ্জাব কিংস: ৯৮/৫ (১২.১ ওভার)

(নেহাল ৩৩*, হ্যাজেলউড ৩/১৪, ভুবনেশ্বর ২/২৬)

ফলাফল: পাঞ্জাব কিংস ৫ উইকেটে জয়ী।

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর