‘বাঘের মতো লড়াই, গর্ব করার মতো এক প্রয়াস।’ পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট নেওয়ার পর এই কথাতেই মুস্তাফিজুর রহমানের প্রতি সম্মান জানায় দিল্লি ক্যাপিটালস। চলতি আইপিএলে দলের হয়ে নিজের শেষ ম্যাচে অনবদ্য এক পারফরম্যান্সই করেছেন এই কাটার মাস্টার।
এবারের আসরে প্লে-অফকে সামনে রেখেই মুস্তাফিজকে দলে ভিড়িয়েছিলো দিল্লি ক্যাপিটালস। যদিও টুর্নামেন্টের শেষ মুহূর্তে এসে প্লে-অফ থেকে ছিটকে পড়ে এই দলটি, তবুও নিজেদের শেষ ম্যাচে বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান। মাত্র ৪ ওভারে ৩৩ রান খরচায় ৩টি মূল্যবান উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। শুধু স্কোরবোর্ডে নয়, ম্যাচের মোড়ও ঘুরিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার।
আরও পড়ুন: আইপিএলে সাকিবকে ছাড়িয়ে গেলেন মুস্তাফিজুর

আর ম্যাচ শেষে দেখা যায় যে, জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলা ও খেলোয়াড়দের অবদান অনুযায়ী ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’ নির্বাচন করে থাকে। সেই সূচকে সবার উপরে বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর। পেয়েছেন ৯৩.৯ নম্বর— অপ্রতিরোধ্য এক উপস্থিতির প্রমাণ। তার কাছাকাছি কেউই নেই। এরপর পাঞ্জাব কিংসের হারপ্রিত ব্রার আছেন দ্বিতীয় স্থানে, তবে পয়েন্টে অনেক পেছনে— মাত্র ৮০.০৩।
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন দিল্লির সামির রিজভি। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, তার পয়েন্ট ৭৪.৭৭—মুস্তাফিজের চেয়ে প্রায় ২০ পয়েন্ট কম! এটা প্রমাণ করে, ফিজের পারফরম্যান্স কতটা প্রভাব ফেলেছে এই ম্যাচে।
আরও পড়ুন: ম্যাচ ড্র করে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশ ‘এ’ দলের
দিল্লি ক্যাপিটালসের এবারের মৌসুমটা হয়তো হতাশাজনক। কিন্তু শেষ দিকে এসেও মুস্তাফিজের ধারাবাহিকতা দলের ভরসার জায়গায় ছিল অটুট। বোলিংয়ের সময় তাঁর প্রতিটি স্পেলেই ছিল ছন্দ আর পরিকল্পনার সমন্বয়। শুরুর দিকে মার খেয়ে হাল ছাড়েননি, বরং সঠিক সময়ে বল হাতে নিয়েছেন বড় উইকেট। এটাই ফিজের আলাদা বৈশিষ্ট্য।

আইপিএলের মিশন শেষে এবার মুস্তাফিজের পরবর্তী মিশন পাকিস্তান সফর। ২৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজে ফিজের কাঁধেই থাকবে পেস আক্রমণের নেতৃত্ব। আগের সফরেই আরব আমিরাতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দলকে জেতালেও পরের দুই ম্যাচে ছিলেন না তিনি— অবাক করা বিষয়, বাংলাদেশও জিততে পারেনি। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়, দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন তিনি।
আইপিএলে শেষ ম্যাচে এমন পারফরম্যান্স কেবল একজন ভালো ক্রিকেটারের চিহ্ন নয়, এটি একজন পেসারের আত্মবিশ্বাস ছড়ানো প্রচেষ্টা। ক্যারিয়ারের অনেক বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকলেও মুস্তাফিজ যেনো আজও দেশের অন্যতম এক ভরসার নাম।
আরও পড়ুন: লাহোরে পৌঁছেছে বাংলাদেশের একাংশ