খুলনার ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা ও অব্যবস্থাপনার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছেন টাইগার ক্রিকেটের পরিচিত মুখ নুরুল হাসান সোহান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া তার সাম্প্রতিক একটি পোস্টে আঞ্চলিক ক্রিকেটের দুর্বল কাঠামো এবং স্বার্থান্বেষী কিছু সংগঠকের আধিপত্যে ক্রিকেটের অচলবস্থা উঠে এসেছে।
বাংলার ক্রিকেটে খুলনা বিভাগকে খেলোয়াড় তৈরির কারখান বললে ভুল কিছু হবে না। খুলনা বিভাগ থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে সার্ভিস দিয়েছে এমন ক্রিকেটারের তালিকা বেশ লম্বা। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, আব্দুর রাজ্জাক, মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শেখ মেহেদী হাসানের মতো তারকারা উঠে এসেছেন এই খুলনা বিভাগ থেকেই। নুরুল হাসান সোহানও প্রতিনিধিত্ব করেন দক্ষিণবঙ্গের এই বিভাগকে।
আরও পড়ুন: পিৎজা-মাটন ত্যাগ, আত্মসংযমে সফল ১৪ বছরের সূর্যবংশী
তবে সোহান দাবি করছেন কিছু সুবিধাভোগী ক্রিকেট সংগঠক ব্যবসায়ীক স্বার্থে ক্রিকেটকে ব্যবহার করছে। আর এ কারণেই মূলত খুলনার ক্রিকেট পিছিয়ে পড়ছে। সোহান তার পোস্টে লেখেন, “একটা সময় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অসংখ্য বড় তারকা ক্রিকেটার খুলনা বিভাগ থেকেই উঠে আসতো। কিন্তু কিছু সুবিধাভোগী ক্রিকেট সংগঠকদের ব্যবসায়ীক স্বার্থে ক্রমশই ক্রিকেটে পিছিয়ে পড়ছে খুলনার লোকাল ক্রিকেটাররা।”
দেশের ক্রিকেটে তৃণমূল পর্যায়ে কর্মপরিকল্পনার অভাব দীর্ঘদিনের। আঞ্চলিক ক্রিকেট নিয়ে বোর্ডের কার্যকরী ভূমিকা নেই বললেই চলে। অধিকাংশ বিভাগে সুনির্দিষ্ট ক্রীড়া নীতিমালা নেই, নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো, এমনকি বেশ কয়েকবছর যাবত প্রতিযোগিতামূলক কোনো খেলার আয়োজনও করছে না কর্তৃপক্ষ। পুরো বিষয় নিয়েই আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সোহান।
আরও পড়ুন: ২২ রানের লিড নিয়ে চা বিরতিতে জিম্বাবুয়ে
সোহান বলেন, “প্রায় ৮-১০ বছর ধরেই খুলনা কোনো লীগ হচ্ছেনা যার ফলে বঞ্চিত হচ্ছে খুলনা বিভাগের লোকাল ক্রিকেটাররা। বিভিন্ন সময়ে অনেকে উদ্যোগ নেয়ার পরও কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির কারনে খুলনার ক্রিকেট নিয়ে কাজ করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। এইসব ব্যক্তির কারনে খুলনায় ঘরোয়া টুর্নামেন্টও আয়োজন সম্ভব হয়নি বিগত বছরগুলোতে। যার ফলে খুলনার অসংখ্য প্রতিভাবান তরুণদের ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়েছে এবং এর দায়ভার তারা কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।”
এভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই দেশের ক্রিকেট ধ্বংসের মুখে পড়বে বলে মনে করেন সোহান। তার পোস্টে তিনি লেখেন, “স্বার্থান্বেষী এইসব সংগঠকদের কারনে ক্রমশই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রিকেট এবং ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট তরুণরা। এইভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে শুধু খুলনার ক্রিকেট না, বাংলাদেশ ক্রিকেটও ধ্বংসের পথে যাবে।”