২০২৪ আইপিএলের আগে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বড়সড় এক সিদ্ধান্ত সাড়া ফেলে দিয়েছিল ক্রিকেটমহলে। পাঁচবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় হার্দিক পান্ডিয়াকে। মাঠের পারফরম্যান্স নয়, বরং ভবিষ্যতের চিন্তা মাথায় রেখেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছিল ম্যানেজমেন্ট। তবে বাস্তবতা বলছে, এই সিদ্ধান্ত কার্যত প্রত্যাশার বিপরীত ফল দিয়েছে।
নেতৃত্ব বদলের পর থেকেই মুম্বাইয়ের পারফরম্যান্স পড়ে গেছে। ২০২৪ সালের আসরেও দল ছিল পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে, আর চলতি ২০২৫ মৌসুমেও ৬ ম্যাচে মাত্র ২ জয় পেয়ে তালিকার নিচের দিকেই রয়েছে তারা। দলে ভেতরে স্পষ্ট বিভাজন না থাকলেও মাঠে সেই সমন্বয়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে না। অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে দল জিততে পারছে না, আবার রোহিত শর্মাও নিজের ব্যাটিং দিয়ে দলকে টানতে পারছেন না।

আরও পড়ুন: জিম্বাবুয়ে সিরিজে আসছে নতুন স্পিন বোলিং কোচ
সম্প্রতি মুম্বাইয়ের মালিক নীতা আম্বানি যখন শিরডি মন্দিরে পুজো দিতে যান, তখন ভক্তদের একাংশ তাঁকে অনুরোধ করেন রোহিত শর্মাকে আবার অধিনায়ক করার জন্য। উত্তরে নীতা বলেন, “সব বাবার ইচ্ছে”— যা হয়তো এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁদের নির্লিপ্ত অবস্থানকেই তুলে ধরে।
তবে রোহিতের ফর্ম নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে করেছেন মাত্র ৫৬ রান, গড় ১১.২০। এমনকি তাকে দু’টি ম্যাচে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবেও নামানো হয়েছে। ফলে শুধুমাত্র নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়াই নয়, খেলার মূল একাদশেও তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

মুম্বাই ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনায় এখনো হার্দিক রয়েছেন ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে। ২০২৩ সালে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে তিনি যেমন সফল ছিলেন, মুম্বাইয়েও হয়তো সেই রূপে দেখতে চেয়েছিল দল। তবে দলের বর্তমান পারফরম্যান্স বলছে— নেতৃত্ব বদলের সিদ্ধান্তের আগে আরও সময় নিয়ে ভাবা উচিত ছিল।
রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে মুম্বাই পাঁচটি শিরোপা জিতেছে, যেটা এই ফ্র্যাঞ্জাইজিটির ইতিহাসে অধিনায়ক হিসেবে এখনো সর্বোচ্চ। ২০১৩ সাল থেকে তার নেতৃত্বে মুম্বাই ট্যাকটিকালি যেভাবে ম্যাচ পরিচালনা করত, সেটি হার্দিকের আমলে দেখা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: আফগান নারী ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াল আইসিসি
চাপের মুহূর্তে দল কীভাবে সামলে ওঠে, কীভাবে ম্যাচের রিদম ধরে রাখে— এসব জায়গায় ঘাটতি স্পষ্ট। এমনকি বোলিং পরিবর্তন, ব্যাটিং অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বা ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার বাছাই— এসব জায়গায়ও প্রশ্ন উঠছে।
এখন দেখার বিষয়, অধিনায়কত্বের এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তবে যত দেরি করে ফেলবে ততই এই ফ্র্যাঞ্জাইজি দলটির জন্যও ইতিবাচক কিছু হবে না।