বুধবার, জুন ২৫, ২০২৫
সামি'স কর্নার

“আমি কখনো হাত মেলাব না”— হাথুরুসিংহ-নাসুম ইস্যুতে তামিমের বার্তা

বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন তামিম ইকবাল। ২০২৩ বিশ্বকাপ চলাকালীন একটি পুরোনো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর যেভাবে তার নাম জড়িয়ে বিতর্ক ছড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলেছেন এই সাবেক অধিনায়ক।

শুক্রবার (৬ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তামিম ইকবাল বলেন, “আমি কখনো আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাব না। যারা আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে বিতর্কে টানছেন, তাদের জন্যই এ কথা বলছি। আমি যদি কখনো ক্রিকেট প্রশাসনে আসি, সেটা হবে সৎ পথে এবং শুধুই দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে। প্রয়োজনে কখনো বিসিবিতে আসব না, তবুও এই মানুষগুলোর সঙ্গে এক হব না।”

আরও পড়ুন: নাসুম-হাথুরুসিংহের ঘটনা মিডিয়ায় এনেছিলেন তামিম, দাবি যমুনার

সম্প্রতি প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনে হাথুরুসিংহে ও নাসুম আহমেদের একটি বিতর্কিত ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে আসে। যমুনা টিভির একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, সেই ঘটনার তথ্য গণমাধ্যমে ফাঁসের জন্য তামিম ইকবাল ও তৎকালীন অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস দায়ী। এ নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে তামিম বলেন, “কারও ব্যক্তিগত মতামত আর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযুক্ত হওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য। তদন্তে যারা ছিলেন, তারা আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করেননি, কারণ আমি তখন স্কোয়াডেই ছিলাম না। এরপরও যদি কাউকে সন্দেহ করা হয়, তাহলে সেটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলতেই হয়।”

তামিম আরও বলেন, “একজন ব্যক্তি তদন্ত কমিটিতে তার ব্যক্তিগত ধারণা দিয়েছেন, সেটাই এখন এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যেন তা চূড়ান্ত প্রমাণ। অথচ তদন্ত রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আমাকে কেউ তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসাও করেনি।”

তিনি জানান, তিনি কখনোই কাউকে নিয়ে প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলেননি। “আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কিছু বলা হয়েছে, এমনকি টেলিভিশনেও নানা মন্তব্য করা হয়েছে। আমি কখনো প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। তবুও যারা আজ নিজেদের স্বার্থে এই বিষয়গুলো নতুন করে সামনে আনছেন, তাদের বলছি— আমি আপনাদের দলে যোগ দেব না।”

আরও পড়ুন: অবশেষে আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন কোহলির বেঙ্গালুরু

প্রসঙ্গত, ২০২৩ বিশ্বকাপ চলাকালীন চেন্নাইয়ে বাংলাদেশের এক ম্যাচের আগে কোচ হাথুরুসিংহে ও ক্রিকেটার নাসুম আহমেদের মধ্যে কথাকাটাকাটির ঘটনা ঘটে। তখন গুঞ্জন ছিল, কোচ নাসুমের গায়ে হাত তুলেছিলেন। এ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি চূড়ান্তভাবে কাউকে দায়ী করেনি, বরং ঘটনাটিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে দেখেছে।

তবে রিপোর্টের সবচেয়ে আলোচিত অংশ ছিল, সেই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া। অভিযোগ উঠে, তামিম ও ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনা মিডিয়ায় পৌঁছে দেন। তদন্ত কমিটির সদস্যদের মতে, এটি একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা ছিল, যাতে কোচ হাথুরুসিংহেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়।

রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, হাথুরুসিংহের অধীনে তামিম মানসিকভাবে চাপে ছিলেন এবং কোচের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা না পাওয়ার কারণেই তিনি একসময় নিজেকে একঘরে ভাবতে শুরু করেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

তবে সেই তদন্ত প্রতিবেদন তখন প্রকাশ করা হয়নি। পরবর্তীতে বিসিবির নেতৃত্ব বদলের পর নতুন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন এবং কোচ হাথুরুসিংহেকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন।

এ ঘটনার আলোকে সামনে এলেও, তামিম ইকবাল সবার উদ্দেশ্যে শুধু একটি কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন— ক্রিকেটের স্বার্থে তিনি থাকবেন, তবে কোনো অসৎ চেষ্টার সঙ্গে তিনি যুক্ত হবেন না।

আরও পড়ুন: ‘এই দলই আমার আত্মবিশ্বাস’ —শিরোপা হাতে উচ্ছ্বসিত কোহলি

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর