এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর অলিম্পিক গেমসে ফিরছে ক্রিকেট। আর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী হবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পোমোনা শহর। ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক আয়োজক কমিটি (LA28) সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এই শহরের ফেয়ারপ্লেক্স মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেটের ম্যাচগুলো।
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করা ক্রিকেটকে ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৮ অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর থেকেই আলোচনায় ছিল— কোথায় হবে এই ম্যাচগুলো? পূর্ব উপকূলের নিউ ইয়র্কে আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর্থিক ও কার্যকর দিক বিবেচনায় ক্যালিফোর্নিয়াই হয়ে উঠেছে আয়োজকদের প্রথম পছন্দ। কারণ, অলিম্পিক ভিলেজ থাকবে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাম্পাসে। শীর্ষ ক্রিকেটারদের সেই ভিলেজে অন্য অ্যাথলেটদের সঙ্গে থাকা এবং গেমসের আবহে সম্পৃক্ত থাকা নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: ‘কামব্যাক’ মাদ্রিদ কী পারবে ঘুরে দাঁড়াতে?
ফেয়ারপ্লেক্স মাঠে সাময়িক কাঠামো নির্মাণ করে খেলা আয়োজন করা হবে, যেটি গেমস শেষে তুলে ফেলা হবে। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই মাঠে ১৯৩২ সালে নির্মিত একটি গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড রয়েছে, যা ৮ হাজার দর্শক ধারণে সক্ষম। সেটি সংস্কার করার পরিকল্পনা থাকলেও এটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অংশ হবে কি না, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে অতীতে এই মাঠে ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার দর্শকসমেত কনসার্ট আয়োজনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
পুরুষ ও নারী— উভয় বিভাগে ছয়টি করে দল অংশ নেবে অলিম্পিকে। ফলে ক্রিকেট বিশ্বে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) চেয়ারম্যান জয় শাহ এক বিবৃতিতে বলেন, “ক্রিকেট অলিম্পিকে ফিরছে, এটা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। গতিশীল ও উত্তেজনাপূর্ণ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট নতুন দর্শকদের মন জয় করবে বলেই বিশ্বাস। LA28 এবং IOC-এর সঙ্গে আমরা মিলেমিশে কাজ করব, যেন এই আয়োজন সফল হয়।”
তবে পিচ নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউ ইয়র্কে তৈরি করা ড্রপ-ইন পিচ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এবারও যেহেতু সাময়িক স্টেডিয়াম তৈরি হবে, তাই পিচের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
ক্রিকেট অলিম্পিকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯০০ সালে প্যারিস গেমসে। একমাত্র ফাইনালে ফ্রান্সকে ১৫৮ রানে হারিয়েছিল গ্রেট ব্রিটেন। এরপর আর কখনো অলিম্পিকের অংশ হয়নি এই খেলা।
আরও পড়ুন: জিতেও হতাশ অ্যাস্টন ভিলা, সেমিতে পিএসজি
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ECB) ইতোমধ্যে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে, ‘টিম জিবি’ নামে যৌথ দল গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে। তবে ঠিক কীভাবে বাছাই হবে দলগুলো, তা ঠিক করবে আইসিসি।
একদিকে ইতিহাস, অন্যদিকে নতুন পথচলা— সব মিলিয়ে ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তন হতে যাচ্ছে রোমাঞ্চে ভরপুর এক অধ্যায়।