দীর্ঘ দশ মাস পর পেশাদার ক্রিকেটে ফিরেছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। গত বছর লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলে অবসরে গিয়েছিলেন তিনি। মাঝে কিছু সময় ইংল্যান্ডের বোলিং মেন্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তবে নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে এখনই বিদায় বলতে প্রস্তুত নন ‘কিং অফ সুইং’ খ্যাত এই ফার্স্ট বোলার। তাই ইংল্যান্ড জাতীয় দলের মেন্টরশিপের দায়িত্ব ছেড়ে আবারও ফিরলেন ক্রিকেটের চিরচেনা ২২ গজে। এবার লক্ষ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা ল্যাঙ্কাশায়ারকে মৌসুমের প্রথম জয় এনে দেওয়া।

চলতি মৌসুমে দলের প্রথম পাঁচটি ম্যাচ না খেললেও, এবার ১৪ সদস্যের দলে নাম এসেছে অ্যান্ডারসনের। শুক্রবার এমিরেটস ওল্ড ট্রাফোর্ডে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে চার দিনের ম্যাচে একাদশে আছেন এই অভিজ্ঞ পেসার। অ্যান্ডারসনের এই ফেরা ল্যাঙ্কাশায়ারের জন্য বিশাল প্রাপ্তি। কারণ মৌসুমে খুবই বাজে শুরুর পর বর্তমানে দ্বিতীয় ডিভিশনের পয়েন্ট টেবিলের একদম নিচে অবস্থান করছে দলটি। এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর গত সপ্তাহেই অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কিটন জেনিংস। নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার মার্কাস হ্যারিস। তবে দলের হেড কোচ ডেল বেনকেনস্টেইন বিশ্বাস করেন অ্যান্ডারসনের অভিজ্ঞতা এই সঙ্কট থেকে উত্তরণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: ৩০০ কোটি নয়, নিজের স্বপ্নকেই বেছে নিলেন কোহলি

ল্যাঙ্কস টিভিকে বেনকেনস্টেইন বলেন, “অ্যান্ডারসনের ফিরে আসাটা আমাদের জন্য বিশাল প্রেরণা। তার বয়সে এসে এখনো এতটা পরিশ্রম করে মাঠে ফেরাটা আসলেই দেখার মতো ব্যাপার। একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সে দারুণ উদাহরণ। মাঠে তার উপস্থিতি দলের জন্য অমূল্য।” ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে অ্যান্ডারসনের শেষ ম্যাচ ছিল গত জুলাইয়ে, নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে। সাউথপোর্টে সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়ে আলো ছড়িয়েছিলেন তিনি। তার কোচ আরও যোগ করেন, “আমরা জানি দলের জন্য সে কি করতে পারে। যদিও দীর্ঘদিন পর এটি তার প্রথম ম্যাচ। তবুও একজন ‘ট্রু ল্যাঙ্কাশায়ারম্যান’ হিসেবে মাঠে তার উপস্থিতি আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে।”

অ্যান্ডারসনের এই ম্যাচটি আরও একটি কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকছে— নাইটহুড সম্মাননায় ভূষিত হওয়ার পর এটাই তার প্রথম মাঠে নামা। টেস্ট ক্রিকেট থেকে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হিসেবে অবসর নেওয়ার পর অ্যান্ডারসন ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে বোলিং পরামর্শকের ভূমিকায় ছিলেন। তবে এই গ্রীষ্মে তিনি সেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ক্রিকেট খেলার প্রতি অ্যান্ডারসনের ভালোবাসা এতটাই প্রবল যে, তিনি আইপিএল ও দ্য হান্ড্রেডে খেলারও চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তিনি কোনো দল পাননি তবে ল্যাঙ্কাশায়ারের সঙ্গে বহুমুখী ফরম্যাটের চুক্তি করেছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই মাসের শেষে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে এক দশকেরও বেশি সময় পর আবারও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দেখা যেতে পারে তাকে।
আরও পড়ুন: আবারও জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেলেন ফাহমিদুল

ল্যাঙ্কাশায়ারের দুর্দশা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, নর্থ্যাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে তিন দিনে হারার পর ক্লাব কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করতে হয়। তবে সব কিছুর পরও দলের প্রয়োজনে ‘স্যার’ জেমস অ্যান্ডারসনের ফেরা হতে পারে একটি ইতিবাচক বার্তা যা বদলে দিতে পারে ল্যাঙ্কাশায়ারের মৌসুম।