পাকিস্তান সুপার লিগের দশম ম্যাচে করাচি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল শাদাব খানের নেতৃত্বাধীন ইসলামাবাদ ইউনাইটেড এবং ডেভিড ওয়ার্নারের করাচি কিংস। টুর্নামেন্টে এর আগে প্রত্যেকটি ম্যাচেই ইসলামাবাদ ইউনাইটেড আগে থেকেই হট ফেভারিট। এদিকে করাচি কিংস ছিল পয়েন্ট টেবিলের ভালো অবস্থানে। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইসলামাবাদের অধিনায়ক শাদাব খান।
শাদাব খানের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক প্রমাণিত হয় ইসলামাবাদের বোলারদের পারফরম্যান্সে। শুরু থেকেই চেপে ধরে করাচি কিংসের ব্যাটারদের। করাচি ইনিংসের শুরুটাই হয় ডেভিড ওয়ার্নারকে হারিয়ে। অন্যদিকে ফর্মে থাকা ব্যাটার জেমস ভিন্সও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তৃতীয় উইকেটে ওপেনার টিম সেইফার্ট সাদ বাইগকে নিয়ে জুটি গড়লেও সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এদিন ৩৭ বলে ৩০ রানের এক স্বভাববিরুদ্ধ ইনিংস খেলেন সেইফার্ট। সাদ বাইগ ও ইরফান আউট হন শাদাব খানের লেগস্পিনে। করাচির প্রতিটি ব্যাটারই ব্যাটে-বলে করতে বেশ সংগ্রাম করছিলেন। দলের রান কোনো মতে ১০০ পার হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ব্যাটিং ব্যর্থতা, রিসোর্স কম, বিকল্প তৈরিতে দিতে হবে সময়
তবে শেষ মুহূর্তে আব্বাস আফ্রিদির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলের রানটা ১২৮ পর্যন্ত পৌঁছায়। আব্বাস আফ্রিদি এদিন এক চার ও তিন ছক্কায় ৯ বলে অপরাজিত ২৪ রান করেন। ইসলামাবাদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন শাদাব খান, নাসিম শাহ ও জেসন হোল্ডার। অসাধারণ বল হাতে হোল্ডারের দুর্দান্ত ফর্ম চলমান রয়েছে। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচ বল করে এখন পর্যন্ত ১১ উইকেট নিয়ে ‘ম্যারুন ক্যাপ’ হোল্ডার এখন হোল্ডারই।
১২৯ রানের মামুলি লক্ষ্যে অবশ্য কখনোই বেগ পেতে হয়নি ইসলামাবাদের ইনফর্ম ব্যাটারদের। উড়ন্ত ফর্মে থাকা শাহিবজাদা ফারহান এদিন শুরু থেকেই চড়াও হন করাচির বোলারদের উপর। ওপেনিং জুটিতে চার ওভারে ৩৪ রান যোগ করেন ফারহান ও আজম খান। এরপর কলিন মুনরো সুবিধা করতে না পারলেও অধিনায়ক শাদাব খান এসে দলের হাল ধরেন। শাদাব খান শেষ পর্যন্ত ৪০ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। দল যখন জয় থেকে মাত্র এক রান দূরে, তখন আব্বাস আফ্রিদির বলে আউট হন শাদাব খান। বল হাতে ৪ ওভারে ১৭ রান খরচায় দলের সেরা বোলার যেমন শাদাব, তেমনি ব্যাট হাতেও ৪৭ রান করা শাদাবই দলের সেরা ব্যাটার। অধিনায়ক শাদাব খানের জন্য এই পারফরম্যান্সটি তাই নিশ্চয়ই বিশেষ কিছুই হয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে মানসিক দুর্বলতা, জিম্বাবুয়ের পারফরম্যান্সে খুশি ল্যাঙ্গাভেল্ট
শেষ পর্যন্ত ১৭ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। করাচির পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন হাসান আলী। ব্যাটে-বলে সমান পারফরম্যান্স করার জন্য এদিন ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন শাদাব খান। এই জয়ে ইসলামাবাদ চার ম্যাচ খেলে এখনো অপরাজিত আছে এই পিএসএলে। অন্যদিকে, চার ম্যাচে দুই জয় ও দুই হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বর অবস্থানে আছে করাচি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে রিশাদ হোসেনের লাহোর কালান্দার্স।
স্কোরকার্ড:
করাচি কিংস: ১২৮/৭ (২০ ওভার)
(সেইফার্ট ৩০, আব্বাস ২৪*, শাদাব ২/১৭, নাসিম ২/২৯)
ইসলামাবাদ ইউনাইটেড : ১২৯/৪ (১৭.১ ওভার)
(শাদাব ৪৭, আজম ৩১, ফারহান ৩০, হাসান ২/২৮)
ফলাফল: ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: শাদাব খান