ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব এবার সরাসরি পড়তে শুরু করেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট কাঠামোয়। প্রথমে থেমে গেছে জমজমাট ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ পিএসএল, এরপর একে একে স্থগিত করা হয়েছে আরও তিনটি ঘরোয়া প্রতিযোগিতা। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের ক্রিকেট যেন এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে— যেখানে ব্যাট-বলের বদলে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে নিরাপত্তা আর অনিশ্চয়তা।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলমান প্রেসিডেন্টস ট্রফি গ্রেড-২, রিজিওনাল ইন্ট্রা-ডিস্ট্রিক্ট চ্যালেঞ্জ কাপ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ ইন্টার-ডিস্ট্রিক্ট ওয়ানডে টুর্নামেন্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, দেশের “বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি” বিবেচনায় নিয়েই এই সিদ্ধান্ত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় এসব টুর্নামেন্ট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, তবে নতুন সূচি নিয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: এক ম্যাচে ১০ ‘রিটায়ার্ড আউট’-কৌশলে ইতিহাস গড়ল আমিরাত

ক’দিন আগেই পিএসএলের বাকি থাকা আটটি ম্যাচও স্থগিত করে দেয় পিসিবি। আসরের বাকি অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজনের কথা থাকলেও, পরবর্তীতে সেখান থেকেও সরে আসতে হয়েছে। ফলে পিএসএলের সঙ্গে দেশটির ঘরোয়া মৌসুমও থমকে গেছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্টস ট্রফির মতো তিন দিনের ম্যাচভিত্তিক আসর, যেখানে তরুণদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সুযোগ মেলে বড় মঞ্চে— সেই সুযোগ এখন কার্যত হারিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচিও এই টালমাটাল অবস্থার বাইরে নেই। চলতি মে মাসের শেষদিকে বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরের কথা থাকলেও সেটি এখন অনিশ্চয়তার মুখে। সফরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হওয়ার কথা ছিল, যেগুলো লাহোর ও ফয়সালাবাদে আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল পিসিবির।

এদিকে পাকিস্তানের পিএসএল স্থগিত হওয়ার আগে স্থগিত হয়েছে ভারতের আইপিএলও। যদিও ভারত পুনরায় শুরু করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর ভারতীয় বোর্ড দ্রুত আইপিএল ফের চালুর পরিকল্পনায় এগিয়ে গেছে। দুই দেশের ভিন্ন পরিস্থিতি এক দৃষ্টিতে তুলে ধরেছে ক্রিকেট আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বাস্তবতাকে।
আরও পড়ুন: মে মাসেই আইপিএল শেষ করতে চায় বিসিসিআই
সবমিলিয়ে, পাকিস্তানের ক্রিকেট এখন এক অনিশ্চয়তার ধাপে দাঁড়িয়ে। তরুণ প্রতিভার বিকাশ থমকে গেছে, বড় মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ হারাচ্ছেন অনেকেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনও ঝুঁকির মুখে। শান্তিপূর্ণ সমাধান ছাড়া এই ধারা কতদিন চলবে, সেই উত্তর এখন শুধু সময়ের হাতে।