শন টেইট—ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম দ্রুতগতির পেসার। অস্ট্রেলিয়ার এই ডানহাতি গতিদানব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। ১১ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার পর নিজেকে যুক্ত করেছেন কোচিং পেশায়। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন ফাস্ট বোলিং কোচদের একজন তিনি।
আরও পড়ুন: পাইপলাইন মজবুত করতে প্রয়োজন এ দলের নিয়মিত সিরিজ: সৈয়দ সামি
কোচ হিসেবে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ফ্রাঞ্চাইজি লীগ বিপিএলের সঙ্গে টেইটের সম্পর্ক বেশ নিবিড়। এ বছর ২০২৫ বিপিএলে চিটাগং কিংসের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন এই অস্ট্রেলিয়ান। শুধু তাই নয়, তিন বছর আগে তৎকালীন বিপিএল টিম চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কোচ ছিলেন তিনি। সেই সময়েই অতিথি হিসেবে শন টেইট অংশ নেন যমুনা টেলিভিশনের এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে, যেখানে প্রশ্ন করেছিলেন ক্রিকেট বিশ্লেষক সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি।
বাংলাদেশের তৎকালীন পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন দায়িত্ব ছাড়ার পর তখন পেস বোলিং বিভাগে এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। সে প্রেক্ষিতেই সৈয়দ সামি জানতে চান—“গিবসন তো চলে গেছেন, আমাদের পেস বোলিং কোচের একটা ভ্যাকেন্সি তৈরি হয়েছে। আপনাকে যদি পেইস বোলিং কোচের অফার করা হয়, আপনি কি সে দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হবেন?”সরাসরি ও অকপট জবাবে টেইট বলেছিলেন, “অবশ্যই, কেন নেব না? আমাকে যদি অফার দেওয়া হয়, আমি অবশ্যই বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগের দায়িত্ব নিতে চাই।”
আরও পড়ুন: শমিতের দুর্দান্ত এসিস্টে বড় জয় ক্যাভালরির
তিন বছর আগের সেই কথোপকথন যেন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। প্রথম আলো সহ বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে—শন টেইট হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পরবর্তী পেস বোলিং কোচ। গিবসনের পর অ্যালান ডোনাল্ড এবং পরে আন্দ্রে অ্যাডামস পেস বোলিং বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার সেই তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছেন টেইট।সেই সাক্ষাৎকারে সৈয়দ সামির আরেকটি প্রশ্ন ছিল—পেইস বোলিং কোচের দায়িত্ব পেলে তিনি প্রথমে কোন দিকটিতে নজর দেবেন? উত্তরে টেইট বলেন যে যেহেতু তিনি দায়িত্ব পেলে ৩ ফরম্যাটের দায়িত্বই নিবেন তাই তিনি তিন ফরম্যাটের জন্যই যথেষ্ট ও যোগ্য পেসার তৈরি করে দিতে চান। এমন পেসার যারা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে এবং বিভিন্ন কন্ডিশনে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম হবে। তাছড়া তরুণ ও উদীয়মান পেসারদের গড়ে তোলার ব্যাপারে আলাদাভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন টেইট।
আরও পড়ুন: সালমানের মাঠে ফেরার আকুতি, বিসিবি ও বিত্তশালীদের কাছে সাহায্যের আবেদন
উল্লেখ্য, শন টেইট ইতোমধ্যে পাকিস্তান জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন এবং আফগানিস্তান দলের সঙ্গেও বোলিং কনসালটেন্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন। ৪২ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান কোচের অভিজ্ঞতা, আগ্রহ এবং স্পষ্ট পরিকল্পনার জন্যই পেইস বোলিং কোচ হিসেবে বিসিবির পছন্দের তালিকায় ছিলেন টেইট।
বাংলাদেশের ফাস্ট বোলিং কোচদের অতীত রেকর্ডও আশাজাগানিয়া—গিবসন, ডোনাল্ড কিংবা অ্যাডামস—প্রত্যেকেই নিজেদের ছাপ রেখে গেছেন। ফলে টেইট যদি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পান, তাহলে তাকেও ঘিরে থাকবে সেই একই প্রত্যাশা—বাংলাদেশের পেস বোলিংকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।