পাকিস্তান সুপার লিগের এলিমিনেটরে মুখোমুখি হয়েছিলো লাহোর কালান্দার্স এবং করাচি কিংস৷ লাহোর কালান্দার্সের স্কোয়াডে তিন বাংলাদেশি থাকায় অনেকেই বলছিলো লাহোর বুঝি মিনি বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান, রিশাদ হোসাইন, মেহেদী হাসান মিরাজ —তিন বাংলাদেশি স্কোয়াডে থাকলেও এদিন একাদশে জায়গা হয় কেবল এক সময়ের বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। এলিমিনেটর ম্যাচে লাহোরে এদিন টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন করাচি কিংসের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার।
ওয়ার্নারের সিদ্ধান্ত কাজে লাগাতে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালোই করে করাচি। টিম সেইফার্ট এদিন ইতিবাচক শুরু করলেও ৮ বলে ১৬ রান করে শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হন। তবে ফর্মে থাকা ওয়ার্নার ও ভিন্স মিলে পাওয়ারপ্লেটা বেশ দারুণ করেন। লাহোরের যে মাঠে পাওয়ারপ্লের অ্যাভারেজ স্কোর ৫০; সেখানে করাচি তুলেছিলো ১ উইকেটে ৭০। পাওয়ারপ্লের পরপরই ৭ম ওভারে বল করতে আসেন সাকিব আল হাসান, প্রথম ওভারেই বাজিমাত করেন সাকিব। মাত্র ৪ রান দিয়ে ওভারের শেষ বলে তুলে নেন জেমস ভিন্সের উইকেট।

আরও পড়ুন: এক ওভার হাত ঘুরিয়েই বাজিমাত সাকিবের
এরপর ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গী হিসেবে আসেন তরুণ সাদ বাইগ। ৪৭ রানে জীবন পেয়ে এবারের আসরের আরেকটি অর্ধশতক তুলে ফেলেন ওয়ার্নার, সেই সাথে এবারের পিএসএল আসরের পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ৩৫০ রান করেন ওয়ার্নার। শেষ পর্যন্ত নবী ও খুশদিলের ফিনিশিংয়ে করাচির সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯০এ। এদিন ফিল্ডিংয়ে বেশ নড়বড়ে ছিলেন লাহোরের ফিল্ডাররা। তবে যে নাঈম ওয়ার্নারের ক্যাচ ফেলেছিলেন, সেই নাঈমই ওয়ার্নারকে তার অফস্পিন ডেলিভারিতে আউট করেন। ৫২ বলে ৭৫ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ওয়ার্নার আউট হলে ম্যাচ শেষ করার দায়িত্ব বর্তায় খুশদিল শাহ ও মোহাম্মদ নবীর উপর। ১০ বলে ১৬ রানের ক্যামিও খেলেন মোহাম্মাদ নবী। শেষ পর্যন্ত খুশদিলের ১৪ বলে ২৭ রানের ক্যামিওতে করাচি কিংসের ইনিংস থামে ১৯০ রানে।

আরও পড়ুন: ১৭ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে শিরোপা জিতলো টট্যানহাম
জয়ের জন্য সাকিবের লাহোরের লক্ষ্য ১৯১। লাহোরের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন হারিস রউফ, এছাড়া শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাঈম, জামান ও সাকিবও উইকেটের দেখা পান। সাকিব মাত্র ১ ওভার বল করে ৪ চার দিয়ে ভিন্সের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন
১৯১ এর লক্ষ্যে শুরুতে দেখেশুনে খেললেও আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বের হন লাহোরের ব্যাটাররা। এদিন স্পিনের বিরুদ্ধে ফাখার জামান বেশ সাবলীল ছিলেন। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ২৮ বলে ৪৭ রানের এক দারুণ ইনিংস খেলেন ফাখার জামান। তবে লাহোরের হয়ে খেলা ঘুরিয়ে দেন তিন নম্বরে নামা আব্দুল্লাহ শফিক, ৩ চার ও ৫ ছক্কায় মাত্র ৩৫ বলে ৬৫ রান করে ম্যাচ লাহোরের দিকে নিয়ে আসেন তিনি। কুশাল পেরেরাও দারুণ সঙ্গ দেন শফিককে। এই দুইজন আউট হয়ে গেলে আরেক লঙ্কান ভানুকা রাজাপাকসে দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন লাহোরের পক্ষে। ৮ বল হাতে রেখেই এলিমিনেটরে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে লাহোর। টুর্নামেন্টে টিকে রইলো ‘মিনি-বাংলাদেশ’ খ্যাত লাহোর কালান্দার্স, পরদিন ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিপক্ষে কোয়ালিফাইয়ার ২ খেলবে লাহোর।
স্কোরকার্ড:
করাচি কিংস: ১৯০/৮
(ওয়ার্নার ৭২, সাকিব ১/৪)
লাহোর কালান্দার্স: ১৯১/৪ (১৮.৪ ওভার)
(শফিক ৬৫, ফাখার ৪৭)
ফলাফল: এলিমিনেটরে জয়ী লাহোর