ভুটান ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিলেন জয়, সে ম্যাচে গোল পেলেও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে পেয়েছেন এসিস্ট। তবে শত চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে হামজা চৌধুরীকে।
কিন্তু হতাশার ভেতরেও এই মিডফিল্ডার যে কেবল পারফরম্যান্স দিয়েই নয়, দলের আত্মবিশ্বাস ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়ও এনে দিয়েছেন নতুন বার্তা। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে লড়েছেন প্রাণপণে, দিয়েছেন রাকিবের একমাত্র গোলে অ্যাসিস্টও। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না ২-১ ব্যবধানের হার এড়াতে।
আরও পড়ুন: হামজা-শমিতদের লড়াই, তবুও হারল বাংলাদেশ
ম্যাচ শেষে নিজের মনের কথাগুলো জানিয়েছেন হামজা। কণ্ঠে আক্ষেপ থাকলেও ভরসার জায়গাটা ছিল আরও বেশি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, “যেমনটা চেয়েছিলাম, সেভাবে পেলাম না। কিন্তু আমরা গর্ব করতে পারি— একটি দল হিসেবে, একটি জাতি হিসেবে। এখনও সবকিছুর শুরু, ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাবো, যেখানে যেতে চাই। ভালোবাসা আর সমর্থনের জন্য অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেখা হবে অক্টোবরে!”
এই কথাগুলো শুধু একজন খেলোয়াড়ের নয়, যেন পুরো দলের আত্মার প্রতিচ্ছবি। একদিকে যেমন জয় না পাওয়ার কষ্ট, অন্যদিকে তেমনি ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদ। ম্যাচে গোল না পেলেও মাঠে লড়াই চালিয়ে গেছেন হামজা, শমিত, রাকিব, তারিক, ফাহমিদুলরা। বিশেষ করে প্রথমার্ধে দারুণ কিছু আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন শমিত, আর দ্বিতীয়ার্ধে এসেই বলের দখল রেখে একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিলেন হামজা।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতে আরও ভালো খেলবে বাংলাদেশ, প্রত্যাশা ক্রীড়া উপদেষ্টার
এই ম্যাচে কোচ কাবরেরা একাদশে রাখেননি অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে। স্ট্রাইকার আল-আমিনকেও প্রথমে মাঠে নামাননি। ‘ফলস নাইন’ হিসেবে রাকিবকে খেলানো হলেও শুরুতে সেই ছন্দ খুঁজে পাওয়া যায়নি। রক্ষণে কয়েকটি ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে দলকে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই অর্ধেই একটি করে গোল করে এগিয়ে যায় সিঙ্গাপুর। শেষ দিকে রাকিবের গোলে ব্যবধান কমানো গেলেও হার এড়ানো যায়নি।
তবে পরিসংখ্যান কিংবা ফল নয়, এই ম্যাচে বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি ছিল লড়াইয়ের স্পিরিট। স্টেডিয়ামে উপচে পড়া দর্শক, গ্যালারির গর্জন আর খেলোয়াড়দের প্রাণান্তকর চেষ্টা— সব মিলিয়ে বোঝা গেল, দলটির মধ্যে নতুন এক আত্মবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। আর হামজারি বার্তা তাই শুধু ক্রীড়াঙ্গনের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য এক অনুপ্রেরণা— শুরুটা হয়েছে কেবল, এবার এগিয়ে যাওয়ার পালা। আগামী অক্টোবরে হংকংয়ের বিপক্ষে আবারও যে ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে হামজার বাংলাদেশ, তা বলাই যায়।