১৭ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে আইপিএল শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছে বিরাট কোহলির দল। সেই আনন্দের মুহূর্তেও কোহলি স্মরণ করিয়ে দিলেন টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা। তাঁর কথায়, আইপিএল জয় জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা হলেও টেস্ট ক্রিকেট তাঁর কাছে অনেক বড়, অন্তত পাঁচ ধাপ ওপরে।
কিন্তু সবার বাস্তবতা কি এক রকম? ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলের অভিজ্ঞতা কিন্তু ভিন্ন। তাঁর মতে, ভারত, অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মতো দেশে টেস্ট খেলে ভালো আয় করা যায়, কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের জন্য ব্যাপারটা এত সহজ না।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটেও আসছে ক্লাব বিশ্বকাপ
সম্প্রতি গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাসেল বলেছেন, “এই দেশগুলোতে টেস্ট খেলোয়াড়দের অনেক ভালোভাবে দেখা হয়। মোটা অঙ্কের চুক্তি থাকে, বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ থাকে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজে আপনি হয়তো ৫০-১০০টা টেস্ট খেলবেন, কিন্তু ক্যারিয়ার শেষে কিছুই থাকবেনা হাতে।”
রাসেলের ভাষায়, “আমি এমন একটা জীবন চাই, যেখানে আমি আর আমার পরিবার স্বচ্ছন্দে থাকতে পারি। উপার্জনটা সেখানে সবচেয়ে জরুরি।” টেস্টে অভিষেক হয়েছিল ২০১০ সালে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেটাই ছিল তাঁর প্রথম ও একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। এরপর আর কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সাদা পোশাকে মাঠে নামা হয়নি তাঁর। রাসেলের দাবি, “আমি টেস্টকে না বলিনি। বরং ওরাই আমাকে বাদ দিয়েছে। আমাকে শুধুই সাদা বলের ক্রিকেটার হিসেবে দেখেছে।”
এরপর থেকে রাসেল নিজেকে প্রমাণ করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আইপিএলসহ বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে জিতেছেন অনেক শিরোপা। ছক্কার ঝড় তুলেছেন মাঠে। এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়জন ক্রিকেটার ১০টির বেশি বড় টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট জিতেছেন, তাদের একজন রাসেল।
আরও পড়ুন: ভারত-ইংল্যান্ড লড়বে ‘অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি’ জয়ে
তবে প্রশ্ন হলো—এই সব কিছু না হলে, তিনি কি টেস্ট ক্রিকেটে লম্বা ক্যারিয়ার চাইতেন? রাসেল সোজা জবাব দিলেন, “না। আমি টেস্টকে সম্মান করি, কিন্তু এটা আমার পথের অংশ ছিল না। আমি নিজে থেকে সরে যাইনি, আমাকে সরে যেতে হয়েছে। আর এ নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই।”
এই কথাগুলোর মাধ্যমে রাসেল যেন শুধু নিজের কথা বলছেন না, বলছেন এমন অনেক ক্রিকেটারের কথা, যারা ছোট দেশের হয়ে খেলে এবং টেস্ট ক্রিকেট খেললেও তাদের ভবিষ্যত বা আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যায়।
কোহলি যখন টেস্ট ক্রিকেটকে সবচেয়ে মূল্যবান বলেন, তখন রাসেলের মতো কেউ হয়তো বলেন— ‘ভালো থাকার জন্য রুটি-রুজি আগে দরকার।’
আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়ে আইসিসির মাসসেরা ওয়াসিম