বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

নাসুম-হাথুরুসিংহের ঘটনা মিডিয়ায় এনেছিলেন তামিম, দাবি যমুনার

২০২৩ সালের ভারত বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ দলের ভেতরে ঘটে যাওয়া এক বিতর্কিত ঘটনায় পরবর্তীতে তোলপাড় হয়েছিল ক্রিকেট পাড়া। বাংলাদেশ দলের তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ক্রিকেটার নাসুম আহমেদকে গায়ে হাত তুলেছিলেন বলে তখন বেশ জোরেশোরেই গুঞ্জন উঠেছিল। তবে তদন্ত কমিটির সেই রিপোর্ট পরবর্তীতে সামনে আসেনি। কিন্তু, দীর্ঘদিন পর অবশেষে ফাস হলো সেই রিপোর্ট। তবে এর ভেতরে আছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যমুনা টিভির সাংবাদিক তাহমিদ অমিতের তথ্যমতে, হাথুরুসিংহ ও নাসুমের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি মিডিয়ায় ফাঁস করার পেছনে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও তৎকালীন ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসকে দায়ী।

বিশ্বকাপের সময় চেন্নাইয়ে এক ম্যাচের আগে ড্রেসিংরুমে হাথুরুসিংহে ক্রিকেটার নাসুম আহমেদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। গুঞ্জন উঠেছিল হাথুরুসিংহ তখন নাসুমের গায়ে হাত তুলেছিলেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে এলে বিসিবি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তিন সদস্যের এই কমিটিতে ছিলেন এনায়েত হোসেন সিরাজ, মাহবুব আনাম ও আকরাম খান।

আরও পড়ুন: অবশেষে আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন কোহলির বেঙ্গালুরু

তদন্তের সময় কমিটি কথা বলেন সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়, কোচ ও সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্ত কমিটি চূড়ান্তভাবে কোচকে দোষী সাব্যস্ত করেনি। বরং বলা হয়, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির ফল হতে পারে।

তবে প্রতিবেদনের সবচেয়ে আলোচিত অংশ হলো তথ্য ফাঁসের প্রসঙ্গ। যমুনা টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্ত কমিটি তথ্য পেয়েছে যে ঘটনার কথা প্রথম সংবাদমাধ্যমে পৌঁছে দেন তামিম ইকবাল ও ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ঘটনাটি ‘ফেরি’ করেছেন— অর্থাৎ মিডিয়ার কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছেন এমনভাবে, যাতে কোচ হাথুরুসিংহের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

তাহমিদ অমিত বলেন, হাথুরুসিংহের নাসুমকে মারার অভিযোগ নিয়ে নাসুমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন তামিম ও জালাল ইউনুস। এরপর সেই তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়। তদন্ত কমিটির মতে, এটি ইচ্ছাকৃতভাবে একটি পরিস্থিতি তৈরি করার প্রচেষ্টা ছিল, যাতে কোচকে সরিয়ে দেওয়ার পটভূমি গড়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: ‘এই দলই আমার আত্মবিশ্বাস’ —শিরোপা হাতে উচ্ছ্বসিত কোহলি

তামিম ও হাথুরুসিংহের দ্বন্দ্ব নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা আলোচনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, হেড কোচের আচরণে মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলেন তামিম। প্রতিবেদনে লেখা হয়, অধিনায়ক হিসেবে ৮ সিরিজের ৬টিতে দলকে জেতানোর পরও কোচের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি তামিম। একপর্যায়ে নিজেকে একঘরে মনে করা শুরু করেন তিনি। এসব কারণেই অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়লেও তখনকার বোর্ড সেটি প্রকাশ করেনি। হাথুরুসিংহে কোচ হিসেবে বহালই ছিলেন। তবে চলতি বছরের ৫ আগস্ট বোর্ডের সভাপতি পরিবর্তনের পর তদন্ত প্রতিবেদনটি নতুন করে গুরুত্ব পায়। নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নিয়ে পুনরায় যাচাই করে হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করেন।

এদিকে ফারুক আহমেদ বিদায় নেওয়ার পর তদন্ত কমিটির সদস্য মাহবুব আনাম দাবি করেছেন, তাদের তদন্তে নাসুমের গায়ে হাত তোলার বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি। তবে যমুনা টিভির হাতে থাকা তথ্য বলছে, এই ঘটনা মিডিয়ার কাছে প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও জালাল ইউনুস।

আরও পড়ুন: রোনালদোর গোলে ফাইনালে পর্তুগাল

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর