৩৭ রানের বড় জয় দিয়ে পাকিস্তান শুরু করেছে বাংলাদেশ সিরিজ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২০১ রান করে টাইগারদের থামিয়ে দিয়েছে ১৬৪ রানে। তবে এমন জয়েও সন্তুষ্ট নন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। বরং তাদের কথাবার্তায় ফুটে উঠেছে— বাংলাদেশকে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না তারা। ম্যাচটিকে কেউ বলছেন ‘স্টার্টার’, কেউবা ‘প্র্যাকটিস’!
সাবেক উইকেটরক্ষক কামরান আকমল মনে করেন, এই জয় যতটা না প্রমাণ, তার চেয়ে বেশি প্রস্তুতির মঞ্চ। তার ভাষায়, “এই ম্যাচটিকে আমি প্রস্তুতির আদর্শ মঞ্চ হিসেবে দেখি। এখন সময় এসেছে নতুনদের যাচাই করার— ফখরের মতো ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিয়ে সাহিবজাদা ফারহান, আব্বাস আফ্রিদিদের মতো তরুণদের সুযোগ দেওয়া উচিত।”
আরও পড়ুন: ফারুকের স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন বুলবুল

বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়কেও খুব একটা বড় কিছু মনে করছেন না কামরান। বলেন, “এ ধরনের জয় কিছু আত্মবিশ্বাস এনে দিতে পারে ঠিকই, কিন্তু প্রকৃত উন্নতির প্রমাণ মিলবে তখনই, যখন বিদেশের মাটিতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিতে পারবে পাকিস্তান। শেষ ৫-৬ বছর ধরে বড় দলগুলোর বিপক্ষে আমরা যেভাবে হেরে আসছি, তা আর মানা যায় না।”
কামরান আকমলের চেয়েও বেশি স্পষ্টভাষী রমিজ রাজা। নিজের ইউটিউব বিশ্লেষণে তিনি বাংলাদেশকে কার্যত ‘নরম প্রতিপক্ষ’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন, “এই জয়টা পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বটে, তবে মনে রাখতে হবে— প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ, যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব একটা হেভিওয়েট দল নয়। তবে দলের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় জয়টিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।”
বাংলাদেশ দলের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রমিজ, “ব্যাটিং কিংবা বোলিং খুব একটা দুর্বল নয় বাংলাদেশের। তবে ২০০ রানের মতো বড় লক্ষ্য তাড়া করাটা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। কিছুদিন আগেই তারা ইউএই’র মতো দলের কাছেও সিরিজ হেরেছে, যা তাদের দুর্বল দিকগুলো স্পষ্ট করে দেয়।”
আরও পড়ুন: ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ বিশ্বাস মুশতাকের

এদিকে সিরিজ শুরুর আগেই সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী সিরিজটিকে তুলনা করেছিলেন ‘স্টার্টার’-এর সঙ্গে, মানে মূল কোর্স শুরুর আগে হালকা কিছু। এখন ম্যাচ জিতে স্বস্তিতে থাকা বাসিত বলছেন, “দলে কিছু পরিবর্তন চোখে পড়েছে, এখন দেখার বিষয় এটা কতদিন থাকে।”
বাংলাদেশ একাদশে শান্তকে না দেখে কিছুটা অবাকও হয়েছেন বাসিত, “ওদের দারুণ একজন ব্যাটার শান্ত। তাকে খেলতে দেখলাম না।”
ম্যাচের ট্যাকটিকস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। রিশাদ হোসেনের এক ওভারে ২২ রান আসায় স্কোর বড় হয়েছে বলে মনে করেন কামরান। আবার শামীম হোসেনকে ১৯তম ওভারে করানো নিয়েও আছে তার আপত্তি, “তার বোলিং দেখে মনে হচ্ছিল, ওই ওভারে অন্তত ৩০ রান উঠতেই পারত। রিশাদের এক ওভারেই ২২ রান আসা— সেটাও স্কোর বড় হওয়ার মূল কারণ বলে মনে হচ্ছে।”

তবে এসব যুক্তির মাঝেও স্পষ্ট—বাংলাদেশকে খুব একটা কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছেন না পাকিস্তানের সাবেক তারকারা। কেউ বলছেন ‘স্টার্টার’, কেউ বলছেন ‘প্র্যাকটিস ম্যাচ’। আর জয়কেও বড় দলের বিরুদ্ধে নয়, বরং নিজেদের সামর্থ্য ঝালিয়ে নেওয়ার মঞ্চ হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন তারা।
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন, পরিশ্রমের ফল পেয়ে খুশি হাসান