বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

সেই অবহেলিত আব্দুল্লাহকে ডাকবে বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট

মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ একজন লেগ স্পিনার। ইয়ং টাইগার্স অ-১৮ ডিভিশনাল কম্পিটিশন ২০২৪-২৫ এ কিশোরগঞ্জের হয়ে ৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়েছেন। তবে যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি তার। ডিভিশনাল দলে জায়গা পাননি তিনি। সেই ক্ষোভে গত ২৫ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আক্ষেপ, হতাশা থেকে স্ট্যাটাস দেন।

পরবর্তীতে ‘অন-ফিল্ড’ প্ল্যাটফর্মে তার ঘটনা তুলে ধরেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি। এরপরই টনক নড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের। সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি পরবর্তী স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট ডাকবে আব্দুল্লাহকে। শাহেদ মাহমুদের তত্ত্বাবধানে যে লেগ স্পিন ক্যাম্প হচ্ছে অতি শিগগিরই সেখানে ডাক পড়তে যাচ্ছে আব্দুল্লাহ’র।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ পাকিস্তান সিরিজে থাকছে না ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম

আব্দুল্লাহ কিশোরগঞ্জের হয়ে ময়মনসিংহের বিরুদ্ধে ৪ উইকেট, নেত্রকোনার বিপক্ষে ৫ উইকেট, নরসিংদীর বিপক্ষে ১ উইকেট, জামালপুরের বিপক্ষে ৫ উইকেট, টাঙ্গাইলের বিপক্ষে ২ উইকেট পেয়েছেন। ছয় ম্যাচে ১৭ উইকেট পেতে ৩৮.৩ ওভার বল করে ১১৫ রান খরচ করেছেন।

এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ আমি এবার খুব কষ্ট করে নিজের সবটুকু দিয়ে খেলেছি। এইচএসসি পরীক্ষা সামনে। তবুও পড়লেখা ফাঁকি দিয়ে খেলেছি। এবার আন্ডার-১৮ এর শেষবার ছিল আমার। আল্লাহও আমার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। যা চেয়েছি তাই পেয়েছি। কিন্তু ১৭ উইকেট পাওয়ার পরও ক্যাম্পের প্রথম দিন আমাকে বলই করতে দেয়া হয়নি।

এছাড়া তিনি আরো বলেন, ১৭ উইকেট পাওয়ার পরও আপনাকে প্রথম দিন বোলিং না করালে আপনি প্রথম দিনই মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বেন, যেমনটা আমি হয়েছিলাম। এরপরের দিন আমাকে একেবারে শেষের দিকে বল করিয়েছে। তারা আমাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণই করে নাই। তৃতীয় দিনও একই কাজ করেছে। এরপর ক্যাম্প থেকে দল ঘোষণা করা হলো, যেখানে আমি ১৪ জন বাদ ১৮ জনের দলেও নেই। তারপর অনেক হতাশা নিয়ে বাড়ি গেলাম। ফ্যামিলি আমাকে অনেক সাপোর্ট দিছে। এবার এত ভালো করার পরও কিছু লোকের কারণে খেলতে পারি নাই টিমে। এখন পরিবার থেকেও বলছে খেলাধুলা করা লাগবে না।

সৈয়দ সামির সাথে আলাপকালে আব্দুল্লাহ জানান, ক্যাম্পে আব্দুল্লাহ ছাড়াও আরো দুইজন লীগ স্পিনার ছিল। তারা দুইজন মিলে ১৩ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া আব্দুল্লাহ ১৭ উইকেটের মধ্যে ১০ উইকেট নিয়েছেন বোল্ড করে, ৫ উইকেট নিয়েছেন এলবিডব্লিউ করে। বাদ বাকি দুই উইকেট পেয়েছেন ক্যাচ থেকে।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর যেকোনো দলকে হারাতে পারে বাংলাদেশ: লিটন

ডিভিশনাল দলে চান্স না পাওয়ার ব্যাপারে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার একশনটা একটু ব্যতিক্রমী। এছাড়া আমার বলে টার্ন কম কিন্তু জোরে জোরে বল করি। এটা একটা ফ্যাক্টর হতে পারে।’

পরবর্তীতে সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি বলেন, ‘এই ধরণের বোলারদেরকে কোচরা সম্বোধন করে ‘ক‍্যাকড়া’ বোলার হিসেবে। বাংলাদেশে আপনি চুরি করেন, ডাকাতি করেন সেটা কোন অপরাধ না কিন্তু একজন লেগ স্পিনার যদি জোরে বল করে তাহলে সেটা খুব বড় ধরনের ফৌজধারী মামলার অপরাধ। বাংলাদেশে ক্রিকেট কোচ যারা আছেন এজ লেভেলে, তারা ভাবেন, যারা একটু জোরে বল করে, অ্যাকশনটা একটু ব্যতিক্রম; তারা অন্যায় করে ফেলছে। এবং এই অন্যায়ের শাস্তি দেয়া হয়। এমন ১৭ উইকেট পাওয়ার পরও দলে সুযোগটা পান না সেই বোলাররা।

বাংলাদেশে অ-১৮ এরপর এজ লেভেল ক্রিকেটের আর পরবর্তী ধাপ নেই। দীর্ঘদিন ধরে অ-২০ ও অ-২৩ ধাপ তৈরির কথা বলা হলেও পাত্তা নেই নীতি নির্ধারকদের। ফলে অনেকের ক্যারিয়ার এখানেই শেষ হয়ে যায়। ক্রিকেটার উঠে না আসার পিছনে এটা অন্যতম কারণ বলে জানান সৈয়দ আবিদ হাসান সামি।

এই একই হুমকির মুখে আব্দুল্লাহও। এইচএসসি পরীক্ষার পর আবারো ক্রিকেট খেলা শুরু করলে কোথায় খেলবে সেই প্রশ্নের কোন উত্তর নেই তার কাছে। তবে আব্দুল্লাহ খেলতে চান।

সর্বশেষ তথ্য মতে, বিসিবি গেম ডেভেলপমেন্ট ডাকবে আব্দুল্লাহকে। শাহেদ মাহমুদের তত্ত্বাবধানে যে লেগ স্পিন ক্যাম্প হচ্ছে অতি শিগগিরই সেখানে ডাক পড়তে যাচ্ছে আব্দুল্লাহ’র।

আরও পড়ুন: টাইগার পেস ইউনিটকে ‘চ্যালেঞ্জিং’ বললেন হেসন

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর