চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে যেন এক ‘শেষ অধ্যায়ের’ পর্দা টানলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে বড় জয়ের পর অবশেষে মুখ খুললেন আইপিএলে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে প্রত্যাশিত কোনো ঘোষণা দিলেন না, বরং রেখে গেলেন এক দ্বিধার ছায়া— “বিদায় বলছি না, আবার নিশ্চিতভাবে ফেরার কথাও বলছি না।”
চলতি মৌসুমটা চেন্নাইয়ের জন্য ছিল হতাশার। প্লে-অফ তো দূরের কথা, পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে শেষ করেছে তারা। ইনজুরির কারণে নিয়মিত অধিনায়ক ঋতুরাজ বেশিরভাগ সময়ই ছিলেন দলের বাইরে, ফলে দলকে আবারও নেতৃত্ব দিতে হয় ধোনিকেই। কিন্তু ২০২৫-এর এই আইপিএলটা যেন ধোনির স্বর্ণালী অধ্যায়ের এক বিপরীত প্রতিচ্ছবি।
আরও পড়ুন: আইফোনের পর বিমানের টিকিট জিতলেন রিশাদ

ম্যাচ শেষে প্রেজেন্টেশনে ধোনি বলেন, “মৌসুমটা যেমনই যাক, আজকের পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে নিখুঁত ছিল। ক্যাচ মিস করেছি সারা টুর্নামেন্ট জুড়ে, কিন্তু আজ ফিল্ডিং দারুণ ছিল। ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমার হাতে এখনো ৪-৫ মাস সময় আছে। তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। শরীর ফিট রাখতে হবে, কারণ আপনি যদি শতভাগ না থাকেন, তাহলে খেলার প্রশ্নই ওঠে না।”
তার কথা শোনে বোঝা যায়, সিদ্ধান্ত নিতে এখনও নিজেকে সময় দিচ্ছেন তিনি। তবে তার জবাবের মধ্যে ছিল এক ধরনের শূন্যতা, যে শূন্যতা হয়তো ‘শেষের শুরু’র ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত হলো আইপিএলের প্লে-অফের লাইনআপ
ধোনি আরও বলেন, “আমি এখন রাঁচি ফিরে যাব, বাইক রাইড উপভোগ করব। এই মুহূর্তে না বলছি শেষ, না বলছি আবার ফিরব। আমার হাতে সময় আছে, সেই সুবিধা আমি নিচ্ছি। তারপর একসময় সিদ্ধান্ত নেব।”
এই কথার মধ্যেই যেন ধরা পড়ে ধোনির ক্যারিয়ারের প্রান্তসীমা। বয়সের ভার, ব্যাটিং অর্ডারে ভূমিকার সীমাবদ্ধতা, আর শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ— সব মিলিয়ে ধোনি জানেন, আইপিএলের ব্যাটসম্যানদের ভিড়ে নিজের জায়গা ধরে রাখা এখন আর সহজ নয়। মজার ছলেই তিনি বলেন, “যদি পারফরম্যান্স দেখে খেলোয়াড়রা অবসরে যায়, তাহলে অনেকেই ২২ বছর বয়সেই খেলা ছেড়ে দিত!”

ধোনি নতুন অধিনায়ক ঋতুরাজকে নিয়ে আশাবাদী। বললেন, “তার চিন্তার কিছু নেই। সে ঠিক জায়গায় মানিয়ে নেবে। যদিও আমার বয়স শুনে মাঝে মাঝে নিজেকেই প্রবীণ মনে হয়— সে আমার চেয়ে ঠিক ২৫ বছর ছোট!”
আরও পড়ুন: আইপিএলে সাকিবকে ছাড়িয়ে গেলেন মুস্তাফিজুর
ধোনির কথাগুলো ছিল অনেকটা আত্মসমালোচনার, অনেকটা অভিজ্ঞতার নির্যাস, আর কিছুটা যেন বিদায়ের পূর্বসূচনা। হয়তো তার বিদায় হবে ধীর, নীরব, ধোনিসুলভ ভাবেই।
তবে তিনি থাকুন আর না থাকুন, তার রেখে যাওয়া ছায়া চেন্নাইয়ের ডাগআউটে অনেক দিন রয়ে যাবে— নেতৃত্ব, ঠাণ্ডা মাথা আর অসীম অভিজ্ঞতার অনুপ্রেরণা হয়ে।