ইডেন গার্ডেনসে নাটকীয় এক ম্যাচে ২ উইকেটে জয় পেয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। আগে ব্যাট করে ১৭৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়েও ম্যাচ জিততে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষদিকে ধোনির অভিজ্ঞতায় ভর করে মাত্র ২ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় চেন্নাই। তবে চেন্নাইকে এদিন জেতাতে মূলত সাহায্য করে চেন্নাইয়ের দুই তরুণ ব্যাটার — উর্ভিল প্যাটেল ও ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। এই হারের ফলে কলকাতার প্লে-অফে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গেছে।
টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েই পাওয়ারপ্লেতে ঝড় তোলে কেকেআর। যদিও ওপেনিং জুটিতে খুব একটা অবদান রাখতে পারেননি রহমানউল্লাহ গুরবাজ, তিনি ৯ বলে ১১ রান করে ফিরে যান। তবে তার বিদায়ের পর নারাইন ও অধিনায়ক রাহানে দলকে আগ্রাসী মেজাজে নিয়ে যান। পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলে ৬৭ রান। কিন্তু নারাইন এবং এরপর রঘুবংশী দ্রুত বিদায় নিলে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় দলটি। রাহানে অবশ্য দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন—৩৩ বলে করেন ৪৮ রান, যদিও ফিফটির আগেই তাকে ফিরে যেতে হয়। তার সঙ্গে মানিশ পান্ডে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন।

আরও পড়ুন: ব্রুকের পরিবর্তে দিল্লিতে সেদিকুল্লাহ, মায়াঙ্ক ফিরলেন বেঙ্গালুরুতে
এরপর আন্দ্রে রাসেল নামেন পুরোনো সেই বিধ্বংসী রূপে। মাত্র ২১ বলে ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। পান্ডে ২৮ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন। তবে রাসেলের আউটের পর শেষ দিকে রানের গতি কিছুটা কমে যায়। তবুও নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৯ রান তুলতে সক্ষম হয় কেকেআর।
চেন্নাইয়ের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার নূর আহমেদ, ৪ উইকেট নিয়ে ধস নামান কেকেআর ইনিংসে। তাকে যথাযোগ্য সহায়তা করেন কাম্বোজ ও জাদেজা।

১৭৯ রানের লক্ষ্যে নেমে চেন্নাইয়ের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। দুই ওপেনার আয়ুশ মাত্রে ও ডেভন কনওয়ে কোনো রান না করেই বিদায় নেন। এরপর পাওয়ারপ্লের মধ্যেই বিদায় নেন অশ্বিন ও জাদেজা। দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে বসে চেন্নাই, তখন মাত্র ৬২ রান দলের স্কোরবোর্ডে।এমন পরিস্থিতিতে উর্ভিল প্যাটেলের ১১ বলে ৩১ রানের ঝড় কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়। নিজের আইপিএল অভিষেকেই ১১ বলে ৩১ রান করে রেকর্ডবুকে চলে যান ২৬ বছর বয়সী এই ভারতীয়, আইপিএল অভিষেকে সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেটধারী ইনিংসের মালিক এখন উর্ভিল।

এরপর ক্রিজে আসেন ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, যিনি কার্যত ম্যাচের চেহারাই বদলে দেন। বৈভব আরোরার এক ওভারে ৩০ রান নিয়ে তিনি চেন্নাইকে ম্যাচে ফেরান, ২২ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করে চেন্নাইকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন তিনি। অবে ব্রেভিস আউট হলে শেষদিকে ম্যাচ জমে ওঠে।

আরও পড়ুন: রুশো-নাওয়াজের রেকর্ড জোড়া শতকে বড় জয় কোয়েটার
তখন দুবে ও ধোনীর জুটি আশা দেখায় চেন্নাইকে। কিন্তু দুবে ৪৫ করে আউট হলে শেষ ওভারে ধোনির উপস্থিতি যেন আশার আলো জ্বালিয়ে রাখে চেন্নাই ডাগ আউটে। যখন শেষ ওভারে ৮ রান দরকার, তখন অভিজ্ঞ এই ফিনিশার প্রথম বলেই আন্দ্রে রাসেলকে হাঁকান ছক্কা। শেষে আনশুল কম্বোজ চার হাঁকালে ম্যাচ ২ বল হাতে রেখেই জয় পায় চেন্নাই। এই জয় চেন্নাইয়ের প্লে-অফ দৌড়ে বড় প্রাপ্তি হলেও, কলকাতার জন্য এটি এক প্রকার ধাক্কা।