নিলামে নামই উঠেনি, আলোচনাতেও ছিলেন না। অথচ সময়ের সবচেয়ে বিস্ফোরক ফর্মটাই যেন উর্ভিল প্যাটেলকে ঠেলে দিল আইপিএলের আলোয়। ভারতের স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দ্রুত সেঞ্চুরি করা এই কিপার-ব্যাটারকে এবার নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস— চোটে ছিটকে পড়া ভানশ বেদির বদলি হিসেবে।
গুজরাটের হয়ে সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে করা সেই ২৮ বলে শতকই যেন ভাগ্যের দরজা খুলে দেয়। মাত্র ২৬ বছর বয়সী উর্ভিল সেদিন ত্রিপুরার বিপক্ষে খেলেন ৩৫ বলে ১১৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। আগের রেকর্ডধারী রিশাভ পান্তকেও পেছনে ফেলেন তিনি—পান্তের সেঞ্চুরির সময় ছিল ৩২ বল।
আরও পড়ুন: অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আইসিসির মাসসেরা হবার দৌড়ে মিরাজ

এখানেই থামেননি। পরের ম্যাচে আরও একটি সেঞ্চুরি—৪১ বলে ১১৫! আসরজুড়ে ছিলেন টানা আলোচনায়। ৬ ইনিংসে ২২৯.৯২ স্ট্রাইক রেটে করেন ৩১৫ রান, মারেন ২৯টি ছক্কা—যা ছিল পুরো টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ।
তবু আইপিএলের নিলামে কোনো দল ডাকেনি তাঁকে। মনে হচ্ছিল, হয়তো আরও একটা মৌসুম অপেক্ষার। কিন্তু হঠাৎই বদলে যায় চিত্র। ভানশ বেদির ইনজুরির পর উইকেটরক্ষক খুঁজতে গিয়ে ট্রায়ালে ডাকা হয় উর্ভিলকে। ১৭ বছর বয়সী আয়ুশ মাত্রের সঙ্গেই ট্রায়ালে নামেন তিনি। দুজনেই জায়গা করে নেন মূল স্কোয়াডে।
চেন্নাইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, উর্ভিলকে নেওয়া হয়েছে ৩০ লাখ রুপির ভিত্তিমূল্যে। যদিও এই তরুণ কিপার ব্যাটারের আইপিএল যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালে, গুজরাট টাইটান্সের স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। কিন্তু এক ম্যাচেও মাঠে নামার সুযোগ মেলেনি।

তবে এরপর নিজের কাজটুকু করেছেন চুপিচুপি। রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালেও সৌরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলেন ১৯৭ বলে ১৪০ রানের ঝলমলে ইনিংস। ধারাবাহিক এমন পারফরম্যান্সই যেন অবশেষে টেনে আনল তাঁকে আইপিএলের মঞ্চে।
আরও পড়ুন: নেইমার-বন্ডের চিকিৎসকের শরণাপন্ন তাসকিন
চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য অবশ্য এবারকার মৌসুমটা একরকম হতাশারই। ১১ ম্যাচে মাত্র দুটি জয় পেয়ে তারা আগেভাগেই ছিটকে পড়েছে প্লে-অফের দৌড় থেকে। এখন বাকি তিন ম্যাচে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ। উর্ভিল প্যাটেলের মতো খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়াটা তাই আর চমক নয়, বরং ভবিষ্যতের বিনিয়োগ।