এ যেন এক সিনেমার দৃশ্য! চোটে জর্জরিত তাসকিন আহমেদ যখন আবারও মাঠের বাইরে, তখন সুস্থ হয়ে ফিরে আসার আশায় তিনি ছুটে গেলেন এমন এক চিকিৎসকের কাছে, যিনি নিজেই কিছুদিন আগেই হাঁটুর অস্ত্রোপচারের টেবিলে ছিলেন। নাম তাঁর প্রফেসর জেমস ক্যাল্ডার— পায়ের গোড়ালি ও হাঁটু নিয়ে সার্জারির দুনিয়ায় এক কিংবদন্তি।
মধ্য লন্ডনের অভিজাত এলাকায় তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘ফোর্টিয়াস ক্লিনিক’-এর দেয়ালে ঝুলে আছে নেইমার ও ভার্জিল ভ্যান ডাইকের স্বাক্ষর করা জার্সি। বিশ্বজুড়ে যেসব অ্যাথলেট দ্রুত ও নিখুঁত চিকিৎসার সন্ধানে থাকেন, তাঁদের জন্য এই ক্লিনিক যেন শেষ ভরসাস্থল।
আরও পড়ুন: সামিতকে খেলাতে কানাডার অনুমতি পেল বাফুফে

ক্যাল্ডার নিজেও একজন খেলাধুলার ভক্ত, যিনি শুধু থিওরিতে নয়, প্র্যাকটিক্যাল বাস্তবতায়ও চিকিৎসা বোঝেন। হাঁটুর অস্ত্রোপচারের পর কদিনের মধ্যেই যেভাবে তিনি স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা শুরু করেন, সেটা তাঁর দক্ষতারই প্রমাণ। নিজেই বলছিলেন— “অস্ত্রোপচারের এক দিন পরের তুলনায় এখন অনেক বেশি সহজে হাঁটু ভাঁজ করতে পারছি।”
বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডও তাসকিনের চিকিৎসায় কম যাচাই-বাছাই করেনি। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের পরামর্শ নিয়েই তাঁরা ক্যাল্ডারকে বেছে নেন। অ্যাকিলিস টেনডিনোপ্যাথির যন্ত্রণায় ভোগা তাসকিন গত এপ্রিলের শেষ দিকে লন্ডন যান, আর ২৯ এপ্রিল তাঁর ক্যাল্ডারের সঙ্গে দেখা হয়।

কেবল ক্রীড়াবিদ নয়, অন্য অনেক ভুবনের তারকারাও ভিড় করেন ক্যাল্ডারের ক্লিনিকে। ‘জেমস বন্ড’ খ্যাত অভিনেতা ড্যানিয়েল ক্রেগের পা ভাঙার পর তাকেও সুস্থ করে তুলেছেন ক্যাল্ডার। রক ব্যান্ড নির্ভানার সাবেক ড্রামার ডেভ গ্রোল কিংবা ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার— তাঁদের সবাই এসেছিলেন এই চিকিৎসকের দ্বারপ্রান্তে। ব্যস্ত সেলিব্রিটির সময়ের মূল্য যখন কোটি টাকার সমান, তখন ক্যাল্ডারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সময়মতো তাঁদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: ফাহমিদুলের সঙ্গে সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন গোলকিপার শ্রাবণ
তাসকিনের জন্য এই সফরও শুধু চিকিৎসার নয়, এক প্রত্যাবর্তনের শুরু। মাঠে ফেরার আগে শরীরকে প্রস্তুত করতেই হবে। আর সেই যুদ্ধে তাসকিনের পাশে আছেন এমন এক যোদ্ধা, যিনি নিজেই ব্যথা নিয়েও লড়াই করে ফিরে আসা শিখিয়েছেন।