প্লে-অফে যাওয়ার দৌড়ে টিকে থাকতে হলে জয় ছাড়া অনয় কিছু চিন্তা করার উপায় ছিলো না পেশোয়ার জালমির। এমন ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল এবারের আসরে হতাশাজনক পারফরম্যান্স করা মুলতান সুলতানস। তাই কঠিন কোনো পরীক্ষা দিতে হলো না পেশোয়ারকে। সহজেই সাত ওভার হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নিলো নাহিদ রানার দল।
আরও পড়ুন: দুই প্রবাসী ফুটবলার নিয়ে শিরোপার স্বপ্ন বাংলাদেশের
নিজেদের ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় মুলতান সুলতানসের জন্য এটি ছিলো সম্মান রক্ষার লড়াই। তবে ব্যাট হাতে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় স্বাগতিক মুলতান। টস জিতে ব্যাট করতে নামা দলটি পাওয়ারপ্লের মধ্যে হারিয়ে বসে দুই ওপেনারকে। ইয়াসির খান সাইম আইয়ুবের প্রথম বলেই স্কুপ খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন ফাইন লেগে। অন্যদিকে অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান খুবই মন্থর ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত আউট হন আহমেদ দানিয়ালের নেয়া দুর্দান্ত এক ক্যাচে।
তায়িব তাহির ও শাই হোপ মিলে এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। দুজন মিলে ২৬ রানের একটি জুটি গড়েন, কিন্তু তখনো দলের রানরেট ছিল পাঁচেরও নিচে। এরপরই শুরু হয় স্বাগতিক ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। তাহির স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান, টার্নার বোল্ড হন মাজ সাদাকতের বলে, দেখতে দেখতেই ৬৬ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা।

তবে তখনো ক্রিজে ছিলেন শাই হোপ। কিছুটা লড়াই করলেও অন্যপ্রান্তে সঙ্গ না পাওয়ায় বড় হয়নি হোপের ইনিংস। শেষ দিকে মোহাম্মদ হাসনাইনের কিছু মারমুখী শট দলকে তিন অঙ্ক ছুঁতে সাহায্য করলেও তা ম্যাচে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। পেশোয়ারের হয়ে ছয়জন বোলার নিজেদের মধ্যে উইকেট ভাগাভাগি করেন, যার মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন আহমেদ দানিয়াল। বল হাতে তিন উইকেটের পাশাপাশি দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়েও অবদান রাখেন এই ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন: অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আইসিসির মাসসেরা হবার দৌড়ে মিরাজ
১০৯ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় পেশোয়ার জালমি। মিচেল ওয়েন আউট হন প্রথম ওভারেই। কিন্তু এরপরই আসে সাইম আইয়ুবের তাণ্ডব। উবাইদ শাহকে এক ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চারে ২২ রান নিয়ে নেন তিনি, যা ম্যাচের মোমেন্টাম পুরোপুরি জালমির দিকে টেনে আনে।

পাওয়ারপ্লের পর শাহিদ আজিজের এক ইনসুইং ডেলিভারিতে বোল্ড হন বাবর আজম। এবারের পিএসএলে ধারাবাহিকভাবে হাসছে না বাবরের ব্যাট। একের পর এক ম্যাচে দিয়ে যাচ্ছেন ব্যর্থতার পরিচয়। এরপর সাইম আইয়ুবও অর্ধশতক থেকে মাত্র এক রান দূরে থেকেই ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। এক স্লোয়ার ডেলিভারিতে ক্যাচ তুলে দেন বাউন্ডারিতে। তবে ততক্ষণে ম্যাচ একপ্রকার শেষই হয়ে যায়।

শেষ দিকে ম্যাক্স ব্রায়ান্ট নামেন তাণ্ডব চালাতে। ফয়সাল আকরামকে মারেন একটি ছক্কা ও একটি চার, পরে স্লিপে ক্যাচ ফেলায় পান আরেকটি জীবন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উবাইদ শাহর এক ওভারে টানা তিনটি চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন ব্রায়ান্ট।
আরও পড়ুন: আইপিএলে আরো ২-৩ মৌসুম খেলতে চান রাসেল
এই জয়ে এখনো প্লে-অফে খেলার দৌড়ে টিকে রয়েছে পেশোয়ার জালমি। পিএসএল ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে প্রতিটি আসরে প্লে-অফে খেলার রেকর্ড ধরে রাখার লড়াইয়ে এক ধাপ এগিয়ে গেলো তারা। অন্যদিকে, মুলতান সুলতানসের জন্য এই পরাজয় যেন এবারের মৌসুমের হতাশাজনক পারফরম্যান্সেরই প্রতিচ্ছবি।