২০১২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও দলে থিতু হতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে সবার নজর কাড়লেও চোট ও নানা কারণে পরবর্তীতে ছন্দ হারান এই টপ-অর্ডার ব্যাটার৷ ১২ বছরের ক্যারিয়ারের গোধূলিলগ্নে এখন জাতীয় দলে কেবল আসা-যাওয়ার মিছিলে আছেন৷ তবে দলে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে কাউকেই দোষী করতে চান না, বরং সবাইকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন বিজয়৷
ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ডাক পেয়েছেন বিজয়৷ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, লিস্ট ‘এ’, টি-টোয়েন্টি—সব মিলিয়ে ৫১ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। গত পরশু মিরপুরে স্বীকৃত ক্রিকেটে ৫১তম সেঞ্চুরির মালিক হয়েছেন তিনি৷ কেবল চলতি ডিপিএলেই বিজয় করেছেন ৮৭৪ রান। যেখানে তার গড় ৭৯ দশমিক ৪৫। আছে ৪টি করে ফিফটি এবং সেঞ্চুরি। যার অর্থ, ইনিংস বড় করার সামর্থ্যটা বেশ ভালোই রপ্ত করেছেন ৩২ বছর বয়সী এই ডানহাতি ব্যাটার৷ এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি বিসিবির৷ ডাকা হলো টেস্ট দলেও৷

তবে ২০১৫ বিশ্বকাপে চোটের পর থেকেই জাতীয় দলের সঙ্গে এনামুল হক বিজয়ের দূরত্ব বেড়েছে৷ জাতীয় দলের হয়ে যতটা না সুযোগ পেয়েছেন, তার চেয়ে বেশি সময় বাইরে থাকতে হয়েছে তাকে। এভাবেই কখনোই থিতু হতে পারেননি বিজয়৷ আঙুলের চোটে সাকিব আল হাসানের ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর বিজয়কে নেওয়া হয় বিশ্বকাপ দলে। তবে পুনেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে বিজয়ের সময় কাটে বেঞ্চে বসে। তবে তিনি মনে করেন, দলে তাকে সুযোগ দেওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যেই থাকুক, সবাইকে শ্রদ্ধা করেন বিজয়৷
আরও পড়ুন: জাতীয় দলে রাখা, না রাখা সম্পূর্ণ বিসিবির বিষয়: বিজয়
দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি পত্রিকাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের এই টপ অর্ডার ব্যাটার বলেন, ‘বিসিবির সবাইকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমার পক্ষে বা বিপক্ষে যে অবস্থানেই থাকুন না কেন। আমি কখনো কাউকে দোষ দিতে চাইনি। জাতীয় দলে পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়ার বিষয়টাও তাঁদের সিদ্ধান্ত। আমাকে নিয়ে তাঁরা কী ভেবেছেন, সেটি তাঁরাই ভালো জানেন। তবে আমার মনে হয়েছে, যতটুকু সুযোগ পেয়েছি, সেটিকে যথাসাধ্য কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। যদি আরও ধারাবাহিক সুযোগ পেতাম, হয়তো ছবিটা ভিন্ন হতে পারত।’

ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত ছন্দকে সঙ্গী করে টেস্ট দলে ডাক পেলেও চট্টগ্রাম টেস্টের একাদশে বিজয় থাকবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। দলে থাকার বিষয়টি বিসিবি’র ওপরেই ছেড়ে দিতে চান তিনি৷ বিজয় বলেন,‘আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে গেছি। কখনো বুঝতে পারিনি, একাদশে থাকছি না কেন; আবার হঠাৎ দলে ডাকও পাচ্ছি। আমি কারও বিরুদ্ধে কথা বলতে চাই না। জাতীয় দলে রাখা, না-রাখা সম্পূর্ণ বিসিবির বিষয়। শুধু এটুকু বলতে পারি, নিজের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখিনি। আমি সঠিক ছিলাম। নিজেকে পূর্ণ প্রস্তুত মনে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ম্যাচে সুযোগ পেলে নিজের সামর্থ্য দেখাতে চান তানভীর
আগামী ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের এই টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আছে সফরকারীরা৷