বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

উইজডেনের বর্ষসেরা বুমরাহ-মান্ধানা

বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বার্ষিক প্রকাশনা হিসেবে পরিচিত ‘উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাক’-এর ২০২৫ সংস্করণে বছরসেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেয়েছেন ভারতের দুই বড় তারকা— জাসপ্রিত বুমরাহ ও স্মৃতি মান্ধানা। ‘উইজডেনস লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ পুরুষ ও নারী বিভাগে বছরের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা। অর্থাৎ, ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মান তাঁদের হাতে উঠেছে।

২০২৪ সালটি জাসপ্রীত বুমরাহর জন্য ছিল ব্যতিক্রমী সাফল্যের বছর। টেস্ট ক্রিকেটে ২০-এর নিচে গড়ে ২০০ উইকেট নেওয়া ইতিহাসের প্রথম বোলার হয়ে গেছেন তিনি। শুধু সংখ্যাই নয়, ম্যাচের প্রেক্ষাপট ও চাপের মুহূর্তে তাঁর পারফরম্যান্সই আলাদা করে তাঁকে এগিয়ে রেখেছে। বছরজুড়ে তিনি খেলেছেন ১৩টি টেস্ট, যেখানে নিয়েছেন ৭১ উইকেট।

আরও পড়ুন: ইডেনে গুজরাটের দাপট, গিল ঝড়ে উড়ে গেল কলকাতা

আর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাঁর সবচেয়ে বড় মুহূর্তটি এসেছিল গত জুনে, টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তে। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র ১৮ রানে ২ উইকেট এবং পুরো টুর্নামেন্টে ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে শিরোপা জিতিয়ে নায়ক হয়েছিলেন বুমরাহ।

এর বাইরে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতেও ছিলেন অবিশ্বাস্য রকমের ধারাবাহিক। ৫ টেস্টে তাঁর শিকার ৩২টি উইকেট— যা ছিল সেই সিরিজে সর্বোচ্চ। উইজডেন সম্পাদক লরেন্স বুথ এ কারণেই তাঁর প্রশংসায় লিখেছেন, “সে খুবই ভয়ংকর, তার বিপক্ষে রান করাও যেন দ্বিগুণ কষ্টসাধ্য। সর্বকালের সেরাদের কাতারে নাম লেখানোর দাবি তুলেছে সে।”

নারী ক্রিকেটে আরেকটি বড় অর্জন এসেছে ভারতের বাঁহাতি ব্যাটার স্মৃতি মান্ধানার হাত ধরে। গত বছর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তাঁর রানসংখ্যা ১৬৫৯, যা নারী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে রয়েছে চারটি সেঞ্চুরি, যা নিজেও একটি রেকর্ড। পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্যেও ছিলেন অনন্য। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে তাঁর ১৪৯ রানের ইনিংস ভারতের ১০ উইকেটের জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

আরও পড়ুন: হামজাদের হারে প্রিমিয়ার লিগে ফিরল বার্নলি

এই দুটি স্বীকৃতিই একাধিক কারণেই বিশেষ। প্রথমত, উইজডেনের স্বীকৃতি পাওয়া মানেই নিরপেক্ষ বিশ্লেষণে ক্রিকেটবিশ্বের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পাওয়া। দ্বিতীয়ত, একই বছরে নারী ও পুরুষ বিভাগে ভারতের দুই তারকা এই সম্মান পাওয়ায় এটা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। ক্রিকেটে এমন সমান্তরাল আধিপত্য খুব বেশি দেখা যায় না।

উল্লেখ্য, ‘উইজডেন লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ খেতাব ২০০৩ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছর কেবল একজন ক্রিকেটার এই স্বীকৃতি পান। ২০১৫ সাল থেকে নারীদের জন্যও চালু হয়েছে এই সম্মাননা। বছরের সেরা ক্রিকেটার নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেবল পরিসংখ্যান নয়, মাঠে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত, চাপের সময় পারফরম্যান্স, ধারাবাহিকতা ও প্রভাব সব মিলিয়েই বিবেচনা করে উইজডেন।

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর