খুশদিল শাহ— বিপিএল থেকেই দুর্দান্ত ফর্মে আছে। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে দারুণ ইম্প্যাক্ট রেখে পাকিস্তান দলেও জায়গা পেয়েছিলেন তিনি, সেই পাকিস্তান দলেই খুশদিল নিজের নামের সুবিচার করেছেন। সেখান থেকে ফর্মটা টেনে এনেছেন পিএসএল—এও। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) এর ১১তম ম্যাচে পেশোয়ারের বিপক্ষে খুশদিল হয়েছেন ম্যাচসেরা। এদিন (২১ এপ্রিল) করাচি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল পেশোয়ার জালমি এবং করাচি কিংস। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় করাচি কিংসের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পেশোয়ার জালমি প্রথমে সাইম আইয়ুবের উইকেট হারায়। তবে এদিন অবশ্য রানের দেখা পান আরেক ওপেনার বাবর আজম। আগের তিন ম্যাচে ০, ১, ২ করা ব্যাটার বাবর আজম আজ কেমন করবেন, সেটা দেখার জন্য উৎসাহী ছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা।

আরও পড়ুন: মিরাজের লক্ষ্য: ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগে উন্নতি
ক্রিকেটভক্তরা আশা করছিলেন, তিনি এই ম্যাচে রান করবেন। ভক্তদের আশা আজ বিফলে যেতে দেননি বাবর আজম। বাবর আজমের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ রানের ইনিংস। তবে খুশদিলের বলে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত ৪১ বলে এই ইনিংসটি একটু ধীরগতিরই ছিল। কিন্তু পেশোয়ারের টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে বাবর আজমের এই ইনিংসটাই দলের সংগ্রহের ভিতটাকে মজবুত করেছে।মাঝখানে মোহাম্মদ হারিস এবং হুসেইন তালাত কিছুটা চেষ্টা করলেও তাদের ইনিংস বড় হয়নি। মোহাম্মদ হারিস ২১ বলে ২৮ এবং তালাত ১৬ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন। লোয়ার অর্ডারে মিচেল ওয়েন কিংবা আব্দুল সামাদরা ব্যর্থ হলে বিপাকে পড়ে দল। তবে দিন শেষে ফিনিশিংয়ের হাল ধরেন ক্যারিবীয় বোলার আলজারী জোসেফ। জোসেফের ১৩ বলে অপরাজিত ২৪ রানে পেশোয়ার জালমি ১৪৭ পর্যন্ত পৌঁছায়। করাচির পক্ষে খুশদিল শাহ এবং আব্বাস আফ্রিদি তিনটি করে উইকেট নেন।
১৪৮ রানের লক্ষ্যে নামতে গিয়ে একেবারে প্রথম বলেই ধাক্কা খায় করাচি কিংস। লুক উডের বলে প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ শিকার হন টিম সেইফার্ট। তবে আরেক প্রান্তে অবিচল ছিলেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। অন্য পাশে লুক উডের বোলিং তাণ্ডব চলতে থাকলেও ডেভিড ওয়ার্নার ছিলেন অনবদ্য। জেমস ভিন্স, সাদ বাইগ, ইরফান খান—কেউই এদিন তেমন সুবিধা করতে পারেননি। মোহাম্মদ নবী কিছুটা চেষ্টা করলেও ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে করাচি কিংস বিপাকে পড়ে যায় যখন ষষ্ঠ উইকেট হিসেবে ডেভিড ওয়ার্নার আউট হন। দলীয় ১১৯ রানের সময় আউট হওয়ার আগে ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস। তবে দল তখন অনেকটা জয়ের থেকে দূরে।

আরও পড়ুন: ইডেনে গুজরাটের দাপট, গিল ঝড়ে উড়ে গেল কলকাতা
তখনই দলের হাল ধরেন খুশদিল শাহ। শেষদিকে খেলা জমে ওঠে যখন পেশোয়ারের বোলাররা চেপে ধরে করাচিকে। তবে খুশদিল ফিনিশিংয়ের কাছে এদিন হার মানতে দেননি বাবর আজমের পেশোয়ারকে। তালাতের করা শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন নয় রান, প্রথম বলেই চার মেরে সমীকরণটা করাচির পক্ষে নিয়ে আসেন খুশদিল। এদিকে হাসান আলী শেষ ওভারের তৃতীয় বলে চার মারলে তিন বল হাতে রেখেই এবং দুই উইকেট হাতে রেখে করাচির টানা দ্বিতীয় জয় সুনিশ্চিত হয়। পেশোয়ারের পক্ষে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন ইংলিশ পেসার লুক উড। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্য এদিন ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন খুশদিল শাহ। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে করাচি কিংস, পেছনে ফেলেছেন রিশাদ হোসেনের লাহোর কালান্দার্সকে। অন্যদিকে চতুর্থ অবস্থানে অবস্থান করছে পেশোয়ার।
স্কোরকার্ড:
পেশোয়ার জালমি ১৪৭/৮
(বাবর ৪৬, খুশদিল ৩/২০, আব্বাস ৩/৩০)
করাচি কিংস: ১৪৮/৮
(ওয়ার্নার ৬০, খুশদিল ২৩*, উড ৩/২৮)
ফলাফল: করাচি কিংস ২ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: খুশদিল শাহ