বৃহস্পতিবার, জুন ২৬, ২০২৫
সামি'স কর্নার

অধরা শিরোপা কী তবে ধরা দিচ্ছে কেইনের হাতে?

চীনের দুঃখ ‘হুয়াংহো’? আর কেইনের? টটেনহামে ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে কোনো ট্রফি না জেতা হ্যারি কেইন বুন্দেসলিগায় এসেও প্রথম সিজন ছিলেন ট্রফিলেস। অবশেষে আরাধ্যের শিরোপা হয়তো এবার আসছে। লিগে আর দুই ম্যাচ জিততে পারলেই ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা জিতবেন দুইবার ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে গিয়েও খালি হাতে ফেরা এই ইংলিশ অধিনায়ক।

হ্যারি কেইনের গল্পটা যেন পুরোনো কোনো ক্লাসিক সাহিত্যের পাতা থেকে উঠে আসা। নায়ক তো বটেই, কিন্তু তার জীবনের পথে এক অদৃশ্য অভিশাপ— তিনি লড়বেন, সবার হৃদয় জিতবেন, কিন্তু ট্রফি? সেটাই যেন ভাগ্যে লেখা নাই!

আরও পড়ুন: ভালভার্দের রকেটে মান বাঁচলো রিয়ালের

চোখের সামনে বারবার এসেছে ট্রফি। ইউরোর ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লিগ কাপ— প্রতিবারই যেন সেই চেনা দৃশ্য। কেইনের চোখে জল, মাথা নিচু, আর হাজারো ভক্তের বুকভাঙা হাহাকার— “এবার এমন না হলেই হত।”

টটেনহামে ১৪ বছর। কী না করেছেন সেখানে! লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা, ক্লাবের ইতিহাসে নাম উঠিয়ে দেওয়া পারফরমার, কিন্তু ট্রফি? একটাও নয়! তাই তো বায়ার্ন মিউনিখে আসার পর সবার মনে একটাই প্রশ্ন ছিল— এবার বুঝি হবে!

কিন্তু ভাগ্যের কী খেল! প্রথম ম্যাচেই সুপার কাপের ফাইনাল হেরে বসে বায়ার্ন, আর কেইনের সামনে আবার সেই পুরনো ট্র্যাজেডির মুখ। সবাই বলতে শুরু করল, “ট্রফি তার ছায়াও মাড়ায় না!”

কিন্তু হ্যারি কেইন থামেননি। বুন্দেসলিগায় একের পর এক গোল, প্রতিপক্ষের জালে আগুন। সর্বশেষ হাইডেনহাইমের বিপক্ষে আবারও তিনি সবার আগে নাম তুললেন স্কোরবোর্ডে। এই এক গোলেই শুরুর দরজা খুলে যায়। শেষ পর্যন্ত বায়ার্ন ৪–০ ব্যবধানে ম্যাচ জেতে, আর টেবিলে ৯ পয়েন্টের বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে যায় লেভারকুসেনের চেয়ে।

৭২ পয়েন্ট নিয়ে এখন তারা চূড়ায়। হাতে আছে ৪ ম্যাচ। যদি পরের দুই ম্যাচ জিতে যায়, তাহলে কোনো হিসাব ছাড়াই বায়ার্নের শিরোপা নিশ্চিত— আর কেইনের ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রফিও।

আরও পড়ুন: শিরোপার আরও কাছে লিভারপুল

হ্যাঁ, হ্যারি কেইন এখন ট্রফির একেবারে দোরগোড়ায়। শুধু দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢোকা বাকি। সেই দরজা পেরোলেই হয়তো আরেকটা ইতিহাস লেখা হবে— যেখানে ট্র্যাজেডির নায়ক হঠাৎ এক দিন পরিণত হন বিজয়ী রাজপুত্রে। এছাড়া সম্প্রতি বুন্দেসলিগার ইতিহাসে দ্রুততম ৬০ গোলের রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। বুড়ো বয়সে ভেঙ্গে দিয়েছেন হালান্ডের রেকর্ড।

শুধু গোল দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে, ঘাম দিয়ে, সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে লড়েছেন তিনি। অবশেষে কী তাহলে একটা ট্রফির মুখ দেখতে যাচ্ছেন কেইন? লেখা হবে কী একটা গল্প— যেখানে দুঃখের শেষে জয়ের আগুনে ঝলসে যাবে সব অতৃপ্তি। হ্যারি কেইনের অভিশপ্ত অধ্যায়ের পাতা এবার বুঝি সত্যিই বন্ধ হতে চলেছে!

আরও খবর

একটি মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ খবর

জনপ্রিয় খবর