বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিপিএল, তৃতীয় বিভাগ লিগ ও মুজিব শতবর্ষ আয়োজনে আর্থিক গড়মিলের খোঁজে তদন্ত করতে মিরপুরে এসেছিল সরকারি এই সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির কার্যালয়ে হাজির হয় দুদকের তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল। অভিযোগের ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের অধীনে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: আইসিসির মার্চ মাসের সেরা ক্রিকেটার আইয়ার

এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন, যার সঙ্গে ছিলেন সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান ও উপসহকারী পরিচালক রাকিবুল হাসান। বিসিবির একাধিক বিভাগের তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে তারা প্রাথমিক অনুসন্ধান চালান। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, তিনটি বড় অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে কমিশন।
প্রথম অভিযোগটি ঘিরে রয়েছে তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগের বাছাই প্রক্রিয়া। অতীতে যেখানে মাত্র দুই-তিনটি দল অংশ নিত, এবার অংশ নিয়েছে ৬০টি দল। কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, অংশগ্রহণ ফি ৫ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ১ লাখ টাকায় নামানো হয়েছে, পাশাপাশি শর্তেও এসেছে শিথিলতা। দুদকের প্রশ্ন— এতদিন কেন দলগুলো অংশ নিত না, সেখানে কী বোর্ড বা কারও হস্তক্ষেপ ছিল?
দ্বিতীয় অভিযোগ বিসিবির সাম্প্রতিক বিপিএল আসর নিয়ে। দুদকের কর্মকর্তারা জানান, গত ১০টি আসরে টিকিট বিক্রি করে বিসিবির মোট আয় ছিল ১৫ কোটি টাকা। অথচ সর্বশেষ আসরেই আয় দেখানো হয়েছে ১৩ কোটি টাকার বেশি। এই অস্বাভাবিক পার্থক্য থেকেই উঠে এসেছে টিকিট রাজস্ব আয় নিয়ে গড়মিলের সন্দেহ।

তৃতীয়ত, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বিসিবির উদ্যোগে আয়োজিত কনসার্ট ও নানা অনুষ্ঠানে খরচ দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি টাকা, যেখানে প্রকৃত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৭ কোটি টাকা— এমন অভিযোগ পেয়েছে দুদক। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, বাজেট ও খরচের এই বিশাল ফারাক আর্থিক অসঙ্গতির ইঙ্গিত দেয়।
দুদক জানিয়েছে, তারা বিসিবির আর্থিক বিভাগ থেকে রেকর্ড সংগ্রহ করেছে এবং সব কিছু যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিশনে। এরপর অভিযোগ প্রমাণিত হলে নেওয়া হবে পরবর্তী ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: নীতা আম্বানিকে অধিনায়ক পরিবর্তনের অনুরোধ ভক্তদের
অভিযানের পুরো সময় বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন এবং বলেন, “আমরা দুদককে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি। যথাযথ তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব নথি সরবরাহ করা হচ্ছে।”