২০১৬ সালের আইপিএল বিশেষ হয়ে আছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে৷ কেননা সেই আসরে প্রথমবারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরার সুযোগ মেলেছিল দলটির৷ শিরোপা জয়ের নেপথ্যের অন্যতম নায়ক ছিলেন বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান। ওই আসরে বোলিংয়ে যতটা দাপুটে, যোগাযোগে ততটাই আনাড়ি ছিলেন ফিজ। প্রথমবারের মতো আইপিএল খেলতে গিয়ে ভাষা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন তিনি৷ এমনকি ম্যাচ চলাকালীন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের বার্তা বুঝতেও ভুল করেন মুস্তাফিজ৷
বল হাতে দুর্দান্ত সব স্লোয়ারে ব্যাটারদের ভড়কে দিতেন বারংবার৷ ১৬ ম্যাচে হাত ঘুরিয়ে তুলে নেন ১৭ উইকেট৷ সবমিলিয়ে ওই আসরে ব্যাটারদের কাছে মুস্তাফিজ হয়ে উঠেন এক আতঙ্কের নাম৷ তবে মুস্তাফিজের আতঙ্ক ছিল ব্যাটিং আর ইংরেজিতে কথা বলা৷ একেবারেই ইংরেজি না জানা বাংলাদেশের এই পেসার প্রথম বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ওই আসরের সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার জয়ের পর রমিজ রাজার অনুরোধে কেবল দুই লাইন বাংলায় কথা বলেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ছিটকে গেলেন রোহিত, পান্টের শাস্তি
হায়দরাবাদের তৎকালীন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ও কোচ টম মুডিও তার সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন৷ ওয়ার্নার তখন এক্সে (তখনকার ট্যুইটার) লিখেছিলেন যে,’গুগল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে বাংলা শিখছি ফিজের জন্য, থোরা থোরা।’
সম্প্রতি ইএসপিএনক্রিকইনফোকে তখনকার সেই পরিস্থিতি স্মরণ করে টম মুডি বলেন, ‘প্রথম দিকে ওকে নিয়ে সত্যিই সমস্যায় পড়েছিলাম।’
অধিনায়ক ওয়ার্নার ইশারা-ইঙ্গিতে মাঠে কথা বলতেন মোস্তাফিজের সঙ্গে। তবে সবসময় সবকিছু বোঝানো সম্ভব হয়ে উঠতো না। যেমন একবার ওয়ার্নার মাথার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, মাথা খাটিয়ে বল করো। তবে মোস্তাফিজ পরের বলটা বাউন্সার করে বসেন। মুস্তাফিজ ভেবেছিলেন মাথার কাছাকাছি বল করতে বলা হয়েছে তাকে।’

আরও পড়ুন: হোয়াইটওয়াশ হয়ে নিউজিল্যান্ড সফর শেষ পাকিস্তানের
এ নিয়ে মুডি বলেন, এই জায়গায় সতর্ক থাকতে হয়। আপনি ভাবছেন আপনি যা বোঝাতে চাচ্ছেন সেটা পরিষ্কার, কিন্তু খেলোয়াড়টি সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে তা নিচ্ছে। এটা আইপিএলের এক বিশেষ দিক, যা যোগাযোগের সক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে। নিজের দেশের কারও সঙ্গে রসিকতা বা ব্যঙ্গ করা যতটা সহজ, এখানে তা নয়।’
সেই আসরে হায়দরাবাদ দলে মোস্তাফিজ ছাড়া শুধু রিকি ভুইই বাংলা বলতে পারতেন। পশ্চিমবঙ্গের এই ক্রিকেটারকে মোস্তাফিজের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দোভাষী হিসেবে কাজে লাগাত হায়দরাবাদ। ভুই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,’মোস্তাফিজ দুইটা জিনিস ভয় পায়। ব্যাটিং করা আর ইংরেজিতে কথা বলা।’